দিঘা বেড়াতে এসে নানা রকম অযাচিত সমস্যায় পড়ার অভিযোগ তোলেন পর্যটকেরা। কারও অভিযোগ, প্যাকেটজাত খাবারের অতিরিক্ত দাম চাওয়া হয় পর্যটকদের কাছে। কারও আবার দাবি, আচমকাই বাড়িয়ে দেওয়া হয় হোটেলভাড়া। পর্যটক দেখলেই ভাড়া বাড়িয়ে দেন টোটোচালকেরাও। ঘুরতে এসে এ সব অভিযোগ নিয়ে অনেকেরই পুলিশের কাছে যান না। আর গেলেও তেমন সাড়া মেলে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই সব সমস্যার সমাধানে দিঘায় চালু হল হেল্পলাইন হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বর।
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)-এর তরফে নম্বরটি চালু করা হয়েছে। নম্বরটি হল— ৭৫০১২৯৫০০১। এর প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই দিঘার বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় নম্বর-সহ পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ডিএসডিএ জানিয়েছে, পর্যটকদের সমস্যা সমাধানে এই হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরটি কাজে আসবে। দিঘায় সমস্যায় পড়লে যে কোনও পর্যটকই এই হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরে নিজের বক্তব্য লিখে পাঠালে পর্ষদ যথাযথ পদক্ষেপ করবে। ১ নভেম্বর, অর্থাৎ গত বুধবার থেকে এই পরিষেবা চালু হয়েছে বলে জানিয়েছে পর্ষদ।
কী ভাবে কাজ করবে এই হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বর? পর্ষদ সূত্রে খবর, হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরটির উপর সরাসরি উন্নয়ন পর্ষদের দফতর থেকেই নজর রাখা হবে। কোথাও কোনও পর্যটক সমস্যা পড়ে জানালে, সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। গুরুতর কিছু হলে জানানো হবে পুলিশকে। যাতে দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারে। দিঘাকে আরও নিরাপদ পর্যটনস্থল হিসাবে গড়ে তুলতেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছে পর্ষদ।
আগে পর্যটকদের সমস্যা সমাধান দিঘা জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ‘কমপ্লেন বক্স’ (অভিযোগ জানানোর বাক্স) রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাতে বিশেষ সুবিধা হয়নি পর্যটকদের। ডিজিটাল যুগে হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরের এই পরিষেবায় সুবিধা হতে পারে বলেই মনে করছেন পর্যটকদের একাংশ। রাজারহাটের বাসিন্দা মাধুরী বসু জানান, “আমরা প্রায়ই দিঘায় বেড়াতে আসি। মাঝেমাঝেই দেখি, প্যাকেটজাত কিছু কিনলেই ১০-২০ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। তার প্রতিবাদ করতে গেলেই বিপদ! বুঝিয়ে দেওয়া হয়, কিনতে হলে বেশি দামেই কিনতে হবে। এ বারও হয়েছে। হোয়াট্সঅ্যাপ নম্বরে অভিযোগ জানিয়েছি। দেখা যাক, পরিস্থিতির পরিবর্তন হয় কি না।’’ দিঘায় এসে খারাপ অভিজ্ঞতা হয় ঠাকুরপুকুরের দীপক পাহাড়ির। দীপক জানান, দিঘা থেকে উদয়পুর যাওয়ার জন্য একটি টোটো ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি। দাম জানতে চাইলে টোটো চালক বলেছিলেন, ইউনিয়নের বেঁধে দেওয়া দাম নেবেন। পরে উদয়পুর থেকে ফিরে আসার পর ৩০০ টাকা চাইলেন টোটো চালক। যেখানে ভাড়া ১০০ টাকা। তা নিয়ে টোটোচালকদের সঙ্গে তাঁর পরিবারের বিস্তর ঝামেলাও হয়। দীপক বলেন, ‘‘দাদাগিরি করে আমাদের থেকে বেশি টাকা নিয়েছিল। কাকে গিয়ে বলব বুঝতে পারিনি। এখন অভিযোগ জানানোর একটা জায়গা পেলাম। দেখি কী হয়।’’