BNS

কী ভাবে ঠেকানো যাবে ‘ফেক নিউজ়’? পুলিশ দিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি

ফেক নিউজ় বা ভুয়ো খবরের রমরমা চলছে এই সময়ে। সেটা শুধু এই রাজ্যে বা দেশে নয়, গোটা পৃথিবীতেই ভুয়ো খবরের রমরমা। সেই সময়ে মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা সমাজের জন্য কতটা জরুরি এই কর্মসূচিতে সেই দিকটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০৩
‘আইনপ্রয়োগকারী এবং গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের সঙ্গে মত বিনিময়’ কর্মসূচিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার-সহ অন্য আধিকারিকেরা।

‘আইনপ্রয়োগকারী এবং গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের সঙ্গে মত বিনিময়’ কর্মসূচিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার-সহ অন্য আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশ দিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ের জন্য এক কর্মসূচির আয়োজন করা হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। এই কর্মসূচির প্রধান উদ্যোক্তা জেলার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। কর্মসূচির বিষয় ছিল ‘আইনপ্রয়োগকারী এবং গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের সঙ্গে মত বিনিময়’। রবিবারের এই কর্মসূচিতে এসপি-সহ জেলা পুলিশের একাধিক আধিকারিক এবং সংবাদমাধ্যমের বহু প্রতিনিধি উপস্থিতি ছিলেন। ফেক নিউজ় কী ভাবে ঠেকানো যায় তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বেশ কিছু ধারা নিয়েও আলোচনা হয়। তার মধ্যে গণপিটুনি, আত্নহত্যা, মহিলাদের উপর মহিলাদের নির্যাতন, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা-সহ একাধিক বিষয় ছিল। সমাজমাধ্যমে ভুয়ো খবর পরিবেশন নিয়েও আলোচনা হয়। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এমন কোনও অভিনব কর্মসূচির আয়োজন এই প্রথম।

Advertisement
Police Super of Paschim Medinipur discussed about BNS with the journalists

পুলিশ দিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়। —নিজস্ব চিত্র।

ফেক নিউজ় বা ভুয়ো খবরের রমরমা চলছে এই সময়ে। সেটা শুধু এই রাজ্যে বা দেশে নয়, গোটা পৃথিবীতেই ভুয়ো খবরের রমরমা। সেই সময়ে মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা সমাজের জন্য কতটা জরুরি এই কর্মসূচিতে সেই দিকটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভুয়ো খবর এবং কোনও ঘটনা নিয়ে ভুয়ো ভাষ্য আটকাতে কী কী পদক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়েও আইন প্রয়োগকারী এবং গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ অর্থাৎ সংবাদমাধ্যমের কথা হয়েছে সবিস্তারে। পাশাপাশি, ভুয়ো খবর আটকাতে জেলা স্তরে সাংবাদিকদের কী কী করণীয়, কী ভাবে ‘ফ্যাক্ট চেকিং কমিটি’ গড়ে তথ্য যাচাই করা যেতে পারে, আলোচনা হয়েছে তা নিয়েও। প্রস্তাব এসেছে, ওই কমিটিতে প্রয়োজনে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। ভুয়ো খবর আটকাতে জেলা জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি করা যে প্রয়োজনীয়, সেটাও উঠে এসেছে আলোচনায়। জেলা স্তরে যত ‘নিউজ় পোর্টাল’ চলছে তার তথ্য সংগ্রহ করে তাদের অ্যাডমিনদের নিয়ে ভুয়ো তথ্য প্রচারের বিষয়ে সচেতনতা মূলক শিবির করার প্রস্তাবও এসেছে। সেই সঙ্গে জেলা স্তরে ব্লক ও পুরসভা এলাকায় মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাবও উঠেছে।

সম্প্রতি তিন আইন আনা হয়েছে দেশ জুড়ে— ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’, ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’। এ সব নিয়ে আগে পুলিশ আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এত দিন ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’, ‘ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধি’ মেনে আইনপ্রয়োগ করা হত। এখন পুলিশ নতুন আইন মেনে মামলা রুজু করছে। এসপি বলেন, ‘‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা নিয়ে জেলার পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জেলার সাংবাদিকেরা সেই আইন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন করেন। তাঁদের কিছু ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। আমরা সেই কাজটাই করতে চেয়েছি। পুলিশ দিবসে গণতন্ত্রে চতুর্থ স্তম্ভের স্বাধীনতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। একই ফেক নিউজ় নিয়েও আমরা সচেতন হওয়ার চেষ্টা করছি। ফেক নিউজ় কী ভাবে আটকানো যায়, তা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিছু প্রস্তাব এসেছে। সেগুলো খতিয়ে দেখে সেই মতো ফেক নিউজড আটকানোর চেষ্টা করা যায় কি না তা দেখতে হবে আমাদের। এই মুহূর্তে ফেক নিউজ় ঠেকানো খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। মূল ধারার সংবাদমাধ্যমের সে ক্ষেত্রে অনেক দায়িত্ব রয়েছে।’’

রবিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমানের সঙ্গে ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) পিনাকী দত্ত, অতিরিক্ত পুলিশ (খড়গপুর) সন্দীপ সেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) সৌমিক সেনগুপ্ত-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement