মহিলা চাকরিপ্রার্থীর হাতে পুলিশের কামড়!
আন্দোলনরত মহিলা চাকরিপ্রার্থীর হাতে পুলিশের কামড়ের অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। সেই আবহে এ বার বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার বিধায়ক মন্তব্য করলেন, ‘‘পুলিশকে কামড়ালে কি পুলিশ রসগোল্লা খাওয়াবে?’’ পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের জেলা কোঅর্ডিনেটর অজিতের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শাসক দলকে পাল্টা কটাক্ষ করেন সেই আক্রান্ত মহিলা চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পাল। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘এমন কথা জবাব দিতেও রুচিতে বাধে।’’ তৃণমূল নেতার ওই মন্তব্যে নিন্দা করেছে বিজেপিও।
বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে রবীন্দ্র সদনে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন অজিত। প্রকাশ্য সভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘সরকারকে লাগাতার বদনাম করে যাওয়া হচ্ছে। পুলিশকে কামড়ালে পুলিশ কি না কামড়ে রসগোল্লা খাওয়াবে?’’ বিধায়কের এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নিন্দার ঝড়। সংবাদমাধ্যমে অরুণিমা বলেন, ‘‘এই ধরনের মন্তব্যের কী জবাব দেব, বুঝতে পারি না। রুচিতেও বাধে। সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য নেতাদের এমন মন্তব্য ভীষণ ভাবে দায়ী।’’
শাসক দলকে বিঁধেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘কোনও সভ্য সমাজে এটা ঘটতে পারে? পুলিশ কামড়ে দিচ্ছে? পুলিশের আর কোনও কাজ নেই? পুলিশকে কি কামড়ানোর ট্রেনিং দেওয়া হয়? এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সরকারের হাতে নিয়ন্ত্রণই নেই।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার বিক্ষোভের দিনে অরুণিমা অভিযোগ করেন, তাঁর হাতে কামড়ে দিয়েছেন এক মহিলা পুলিশকর্মী। পুলিশ অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেনি। তবে তারা পাল্টা দাবি করেছে, অভিযুক্ত মহিলা পুলিশকর্মীর হাতেও কামড়ানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের বক্তব্য, পুলিশ যেহেতু কামড়ের কথা স্বীকার করে নিয়েছে, তাই বিষয়টি আর অভিযোগের স্তরে নেই। ব্যাপারটা কি তা হলে কামড়ের বদলে কামড়? পুলিশ লাঠিপেটা করে, টেনেহিঁচড়ে বা চ্যাংদোলা করে ভ্যানে তোলে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, জলকামানও চালায়। কিন্তু পুলিশকে কখনও এর আগে কামড় দিতে দেখা গিয়েছে কি না, অনেকেই তা মনে করতে পারছেন না।
পুলিশের বিরুদ্ধে ‘কামড়ে’ জখম চাকরিপ্রার্থী অরুণিমাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে গা-ছাড়া ভাব এবং টালবাহানার অভিযোগও উঠেছে। যদিও পুলিশের পাল্টা দাবি, দু’জন আন্দোলনকারীকে শুরুতেই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অরুণিমার বাধাতেই তাঁকে নিয়ে যেতে দেরি হয়। পরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ডাক্তার দেখানো হয়। সংবাদমাধ্যমে অরুণিমা অভিযোগ করেন, তাঁর হাতে দু’বার কামড়ে দেয় পুলিশ।