—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’তে অভিযোগ জানিয়ে ও ঝড়-বৃষ্টিতে ভেঙে যাওয়ায় জেলায় প্রায় সাতশো জন আবাসের বাড়ি পেলেন। ঝাড়গ্রাম জেলায় আবাসের চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ গেল প্রায় ২৬০০ জনের নাম। জেলায় ২০ হাজার ১৮৩ জনের আবাসের বাড়ির জন্য টাকা পেয়েছেন। তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিভান্স সেলে’ অভিযোগ জানিয়ে বাড়ি পেয়েছেন ৬২৭ জন। এ ছাড়া বৃষ্টি বা ঝড়ের জন্য ভেঙে যাওয়ার পর বাড়ি ভেঙে ৬৯ জন বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন।
গত কয়েকবছর থেকে জেলা জুড়ে আবাস যোজনার কাজ বন্ধ রয়েছে। ২০২২ বছর ডিসেম্বরে আবাস নিয়ে জেলায় ৫০ হাজার বাড়ি সমীক্ষা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি গরমিল পাওয়া গিয়েছিল। জেলা জুড়েই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল যার পাকা বাড়ি রয়েছে তারাও আবাস যোজনার দাবিদার। আবার একই পরিবারের দু’জন থেকে তিনজনের বাড়ির তালিকায় নাম ছিল। দোতলা বাড়ি রয়েছে এমন অনেকেরও নাম ছিল সেই তালিকায়। সমীক্ষার পর ৩০ হাজারের বেশি উপভোক্তার নাম বাদ গিয়েছিল। জেলায় ২২ হাজার ৮৪৬টি বাড়ি অনুমোদন মিলেছিল। কিন্তু অনুমোদন মিললেও জেলায় নতুন বাড়ির জন্য টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে বাড়ি তৈরি হয়নি। এ বার সেই তালিকা ধরে আবার সমীক্ষা হয়। আগের তালিকায় থাকা ২২ হাজার ৮৪৬ জনের থেকেও এ বার ২৬০০ জনের নাম বাদ যায়। কারণ, গত দু’বছরে আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে অনেক পরিবারে। আবার অনেকে হয়তো পাকা বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন।জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, নিয়ম অনুযায়ী কারও টিনের বা অ্যাসবেস্টটের ছাউনি দেওয়া পাকা চারটি পাকা দেওয়াল থাকলেও তিনি তালিকায় অনুপোযুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবেন। এ রকম উপভোক্তাদেরই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’কে জানিয়ে বাড়ি পেলেন ৬২৭ জন। এর মধ্যে জামবনি ব্লকে ১৯৫ জন ও বিনপুর-১ ব্লকে ১৫৫ জন রয়েছেন। আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে ৪২ জন, জামবনি ব্লকে ১৬ জনের নাম আবাস প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গ্রামবাসীরা বলছেন, ‘‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়েই যে কোনও কাজে ফল মিলছে। এমনকি বাড়ির জন্য টাকাও মিলছে।’’
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও জানাচ্ছেন, শুধু আবাসের বাড়ি নয়, মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভান্স সেলে অভিযোগ জানানোর পর রাস্তাঘাট থেকে পানীয় জলের সমস্যার কথা জানানোর পর তা সরাসরি জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ আসে সমাধান করার জন্য। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এ বার ২০১৮৩ জন বাড়ি তৈরির টাকা পেয়েছেন। এর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভান্স সেল ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পরও অনেকে বাড়ি পেয়েছেন। প্রায় ২৬০০ জনের নাম বাদ গিয়েছে আবাসের তালিকা থেকে।’’