ভ্রামমাণ সেই ল্যাবরেটরি। নিজস্ব চিত্র।
জেলার সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে খাবারের মান পরীক্ষার জন্য চালু হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ খাবার পরীক্ষাগার (মোবাইল ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি)। স্বাস্থ্যভবন থেকে ওই ভ্যান ইতিমধ্যেই ঝাড়গ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতরে চলে এসেছে।
জেলার খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিকরা ওই ভ্রাম্যমান খাবার পরীক্ষাগার ভ্যান নিয়ে আচমকা যে কোনও হোটেল, খাবার দোকান, রিসর্ট কিংবা হোম স্টেতে খাবারের মান পরীক্ষা করবেন। যাকে বলে একেবারে ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’। সরকারি অতিথিশালা, সরকারি হাসপাতাল, আবাসিক স্কুলের পড়ুয়াদের খাবারের গুণগত মানও পরীক্ষা করে দেখা হবে। মূলত, রান্নায় ব্যবহৃত তেল, জল, দুধ, মশলা, আনাজের মান পরীক্ষা করা হবে। একাধিক পরীক্ষার পরও খাবারের গুণগত মান খারাপ পাওয়া গেলে এক থেকে দু'লক্ষ টাকা জরিমানা করারও বিধান রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ ওই ভ্যান থেকে তৎক্ষণাৎ খাবারের মানের রিপোর্ট মিলবে। ওই ভ্যান থেকে চটজলদি এক বছরের জন্য ফুড লাইসেন্সও করাতে পারবেন খাবারের ব্যবসায়ীরা।
ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা জানান, ঝাড়গ্রাম জেলার তিন জন খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক ওই পরীক্ষাগার নিয়ে জেলার বিভিন্ন জায়গায় যাবেন। তিনি বলছেন, ‘‘শীতে ঝাড়গ্রামে প্রচুর পর্যটক আসেন। পর্যটকদের খারাপ খাবার দেওয়া হলে ভুল বার্তা যাবে। সেই কারণে ভ্রাম্যমাণ খাবার পরীক্ষাগারটি জেলার বিভিন্ন জায়গায় যাবে। খাবারের মান পরীক্ষা করবে। যাঁরা খাবারের ব্যবসা করছেন তাঁদেরও ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।’’ শুধু বেসরকারি ক্ষেত্রই নয়, সরকারি হাসপাতাল, আবাসিক স্কুলের পড়ুয়াদের খাবারের মানও একই ভাবে পরীক্ষা করা হবে বলেও জানান তিনি।
ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘জেলায় সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত বেসরকারি হোম স্টের সংখ্যা ১০২টি। এছাড়াও জেলাজুড়ে আরও প্রায় শ’দেড়েক লজ-হোটেল-রিসর্ট রয়েছে। এই উদ্যোগে খাবারের মান উন্নত হবে। কিচেন স্টাফরাও প্রশিক্ষিত হবেন। পর্যটনের একটি গুরুত্বপূরণ বিষয় হল খাবার।’’
বুধবার জেলা স্বাস্থ্যভবনের সভাঘরে জেলার বিভিন্ন হোমস্টে-রিসর্ট ও হোটেলের ৪০ জন কর্মীকে খাদ্য সুরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্টান্ডার্ড অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশিক্ষক মৃদুল দে এ দিন প্রশিক্ষণ দেন। উল্লেখ্য, গত মাসে বেলপাহাড়ির একটি হোমস্টের খাবারের মান নিয়ে সমাজ মাধ্যমে অভিযোগ করেন এক প্রবীণ পর্যটক।