Firecracker recovered

ঘিঞ্জি বাজারের গুদামে উদ্ধার বিপুল বাজি

পটাশপুরের মংলামাড়ো বাজারের এই ঘটনা পুলিশ-প্রশাসনকেও নাড়িয়ে দিয়েছে। পটাশপুরের সবচেয়ে বড় ও জনবহুল বাজার হিসেবে এটি প্রসিদ্ধ।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৪ ০৯:০৯
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

খাদিকুল ও পয়াগে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ থেকেও শিক্ষা নেয়নি অনেকে! এ বার জনবহুল বাজারে ঘিঞ্জি এলাকায় গুদাম ঘর থেকে উদ্ধার হলো প্রায় দু’ টন বেআইনি বাজি। উদ্ধার হওয়া বাজির আনুমানিক বাজার মূল্য সাত থেকে আট লক্ষ টাকা।

Advertisement

বাজারের মধ্যে এমন বিপুল পরিমাণ বেআইনি বাজি মজুত থাকার খবর প্রকাশ্যে আসার পর আতঙ্কিত স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দারা। গুদামে কোনও ভাবে আগুন লাগলে কী ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো, ভেবে আঁতকে উঠছেন তাঁরা।

পটাশপুরের মংলামাড়ো বাজারের এই ঘটনা পুলিশ-প্রশাসনকেও নাড়িয়ে দিয়েছে। পটাশপুরের সবচেয়ে বড় ও জনবহুল বাজার হিসেবে এটি প্রসিদ্ধ। বেআইনি বাজি নিয়ে এত কড়াকড়ির মধ্যেও এই বাজারে কী ভাবে এত বাজি মজুত করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ সূত্রের খবর, বাজারে মনিহারি দোকানের আড়ালে বেশ কয়েক বছর ধরে বেআইনি বাজি মজুত ও বিক্রি করতেন ব্যবসায়ী জগন্নাথ আদক।

রবিবার অভিযুক্ত বাজি কারবারি জগন্নাথ আদককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রসঙ্গত, গত বছর এগরার খাদিকুলে কৃষ্ণপদ বাগের বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ১১ জনের মৃত্যু হয়। গত সপ্তাহে কোলাঘাটে পয়াগে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে একাধিক পাকা বাড়ি ভেঙে পড়ে। আগেও পাঁশকুড়ার সাধুয়াপোতায় বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণ ঘটেছিল। পয়াগেও অতীতে একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছে। তার পর জেলায় বাজির উপর নজরদারি ও কড়াকড়ি বেড়েছে। তা সত্ত্বেও মংলামাড়ো-র মতো পরিচিত বাজারে এমন বিপুল পরিমাণ বাজি মজুত হওয়ায় পুলিশের নজরদারিও সন্দেহের আতসকাচের তলায় পড়েছে।এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবীদয়াল কুণ্ডু বলেন, ‘‘বেআইনি বাজি মজুতের খবর পেয়েই দ্রুত উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু হয়েছে। কোনও ভাবে এ বারে কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত হবে না।’’

পুলিশ জানিয়েছে, খাদিকুলে বেআইনি বাজি কারখানার বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশি ধড়পাকড়ের জেরে মাঝে বাজি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত জগন্নাথ। বড়হাট এলাকায় বাড়ি হওয়ার সুবাদে সেখানকার অনেক বেআইনি বাজি কারবারির সঙ্গে জগন্নাথের যোগাযোগ রয়েছে। পুলিশি নজরদারি শিথিল হতেই ফের দোকানের গুদাম ঘরে তিনি বেআইনি বাজি মজুত করে কারবার শুরু করেছিলেন। গ্রামীণ এলাকায় বেআইনি বাজি কারবারিরা পুলিশের ভয়ে বাজি তৈরি ও বিক্রি বন্ধ করেছে। সেই সুযোগে বাজির চাহিদা তুঙ্গে ওঠায় জগন্নাথ ফের ধীরে ধীরে বাজি কারবারে বেশি করে অর্থলগ্নি করতে থাকেন। এলাকার বাজি কারবারিদের কাছ থেকে গোপনে বাজি কিনে মজুত করেন গুদামে।

শনিবার রাতে প্রচুর পরিমাণে বেআইনি বাজি ও পটকা, চকলেট বোম মজুত করার খবর আসে পুলিশের কাছে। রবিবার দুপুরে পুলিশ গুদামে হানা দিয়ে প্রায় দু’ টন বেআইনি বাজি উদ্ধার করে। জনবহুল বাজারের মধ্যে এমন বিপুল পরিমাণ বাজি উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাররা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement