শ্মশানকালীর মন্দিরে সরকারি ধান কেনার শিবির। ডেবরায়। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের শ্মশান। অন্য অনেক জায়গার মতো এখানেও রয়েছে কালী মন্দির। আর সেই মন্দিরের চাতালেই হয়েছে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র (সিপিসি)। সেখানে নিয়ম করে বসছেন সরকারি কর্মীরা। তবে সে ভাবে চাষির দেখা নেই।
ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার। ডেবরায় একটিই সিপিসি হয়েছে। তাও আবার শ্মশান কালী মন্দিরে। এখানে ধান কেনাও হয়েছে সামান্য। এই সিপিসি-র ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে বুধবার পর্যন্ত কেনা হয়েছে ৬০ মেট্রিক টন। মাত্র ১.২ শতাংশ। দিনে গড়ে জনা তিনেকের বেশি চাষি আসছেন না। স্থানীয় এক চাষি বললেন, ‘‘ওখানে যেতে ভয় করে। বিকেল গড়ালে চারপাশ অন্ধকারে ডুবে যায়।’’ আরেক চাষি দুলাল রায়ের সাফ কথা, ‘‘খোলাবাজারে দাম না পেলে তখন ওখানে যাব। তার আগে নয়।’’শ্মশান চত্বরে ধান ক্রয় কেন্দ্র কেন? আর জায়গা পাওয়া গেল না? জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরির জবাব, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি ঠিক কী হয়েছে।’’ জেলা খাদ্য নিয়ামক অরবিন্দ সরকারও বলেন, ‘‘খোঁজ নিচ্ছি।’’ তবে জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানালেন, ‘‘আসলে আশেপাশে তেমন আর কোনও জায়গা নেই। তাই ওখানে সিপিসি হয়েছে। তেমন হলে সরিয়ে নেওয়া হবে।’’এই মন্দিরে তারা মায়ের মূর্তি রয়েছে। নিত্যপুজো, সন্ধ্যারতি হয়। এখন মন্দিরের চাতালে রয়েছে ওজন মাপার যন্ত্র। ফ্লেক্সে লেখা, ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ২০২৪-’২৫ খরিফ বিপণন মরশুমে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের থেকে ধান ক্রয় করছে রাজ্য সরকার।’ ধানের গুণমান সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য কী করণীয়, ধান বিক্রির জন্য কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন, সে সবও লেখা রয়েছে।পশ্চিম মেদিনীপুরেও নভেম্বর থেকে চলছে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা। গতবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লক্ষ ৭ হাজার মেট্রিক টন। এ বার হয়েছে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। ঘাটাল-সহ জেলার একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পিঠোপিঠি দু’বার। ফলে, ধান চাষে ক্ষতি হয়েছে। তাই লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়েছে বলে অনুমান।