Jhargram

রাস্তা জবরদখল করবেন না, পথে নেমে অনুরোধ পুর প্রতিনিধির  

ভৌগলিক ভাবে ১০ নম্বর ওয়ার্ডটি ঝাড়গ্রাম শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড। এর মধ্যে রয়েছে শিবমন্দির মোড়, কোর্ট রোড, স্টেশন রোড, সুভাষচক, পাঁচ মাথার মোড়ের মত ব্যস্ততম এলাকা।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ০৮:১৬
মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরে মঙ্গলবার সাত সকালে ঝাড়গ্রাম উড়ালপুলের নিচে দীর্ধ দিনের জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করা হল।

মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরে মঙ্গলবার সাত সকালে ঝাড়গ্রাম উড়ালপুলের নিচে দীর্ধ দিনের জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করা হল। — নিজস্ব চিত্র।

পুর-পরিষেবা ও রাস্তা জবরদখল নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই মঙ্গলবার সাত সকালে পথে নামলেন ঝাড়গ্রাম পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি অজিত মাহাতো। অজিত জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকও। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে ঝাড়গ্রামের অন্যান্য পুরপ্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনিও ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন।

Advertisement

ভৌগলিক ভাবে ১০ নম্বর ওয়ার্ডটি ঝাড়গ্রাম শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড। এর মধ্যে রয়েছে শিবমন্দির মোড়, কোর্ট রোড, স্টেশন রোড, সুভাষচক, পাঁচ মাথার মোড়ের মত ব্যস্ততম এলাকা। এছাড়াও জুবিলি বাজার, মাছ পট্টি, আনাজ পট্টি, গাড়ির স্ট্যান্ড চত্বর, রবীন্দ্রপার্কের মত গুরুত্বপূর্ণ এলাকাও রয়েছে ওই ওয়ার্ডে। স্টেশন চত্বর, জেলাশাসকের দফতর, সার্কিট হাউস, পূর্তভবন, ডিএফও অফিসের মত গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলিও অজিতের ওয়ার্ডভুক্ত। এখানে জবরদখলের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই মাথাব্যাথার কারণ। স্টেশন চত্বর থেকে সুভাষ চক হয়ে পাঁচ মাথা মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধার জবরদখল করে রয়েছে একাধিক ফল, মিষ্টি, ফুল, খাবার ও মনোহারী জিনিসের দোকান। আছে সেলুনও। ফলে পাঁচ মাথা মোড় থেকে সুভাষ মোড় হয়ে স্টেশন যাওয়ার রাস্তার দু’ধারের ফুটপাথ কার্যত উধাও হয়ে গিয়েছে। কিছু ঠেলাগাড়ির হকারও রাস্তা জুড়ে বসেন। একাংশ দোকানদার রাস্তার উপরেই সামগ্রী রাখেন, যার ফলে যানজট হয়। হাঁটাচলাতেও সমস্যা হয়।

এদিন অজিত রাস্তার ধারের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘এর আগেও অনেকবার আপনাদের বলা হয়েছে, মানুষের চলাচলের ফুটপাথ দখল করে অসুবিধার সৃষ্টি করবেন না। আপনারা ব্যবসা করুন। তবে ফুটপাথ ছেড়ে। আপনাদের রুজিরুটির ক্ষতি আমরা চাই না।’’ অজিতের কথার জবাবে ব্যবসায়ীরাও ফুটপাথ ছেড়ে ব্যবসা করবেন বলে জানান। যদিও ব্যবসায়ীরা নিজেদের তরফে ফুটপাথ জবরদখলমুক্ত করেননি এদিন। অজিত বলছেন, ‘‘আমি এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার ওয়ার্ডের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি। এরপর মাইক যোগে নিয়মিত প্রচার করব।’’ একই সঙ্গে তিনি মনে করাচ্ছেন, জবরদখল মুক্ত করা তাঁর একার দায়িত্ব নয়। এর জন্য পুরবোর্ডের অনুমোদন প্রয়োজন। ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান কবিতা ঘোষ বলছেন, ‘‘মানুষের চলাচলের ফুটপাথ যাতে মুক্ত করা যায় সেজন্য সকলের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’

অভিযোগ, বাম আমল থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তা দখল করে দোকান হয়ে গিয়েছে। এখন তৃণমূলের জমানায় হাই ড্রেনের উপর ঢালাই করে দোকান, গ্যারাজ ঘর তৈরি হয়েছে। উড়ালপুলের তলায় সরকারি জমি দখল করেও দোকান হয়ে গিয়েছে। প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকার বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়ে শাসকদলের নেতা-জনপ্রতিনিধিরা রাস্তায় নামছেন। কিন্তু যাঁরা নিজেরাই জবরদখলে অভিযুক্ত তাঁদের কথা ব্যবসায়ীরা কি আদৌ শুনবেন? ফুটপাথে হাঁটার অধিকার কি ঝাড়গ্রামবাসী ফিরে পাবেন?’’

শহর তৃণমূলের সভাপতি নবু গোয়ালা বলছেন, ‘‘জবরদখলে শাসকদলের কেউ জড়িত প্রমাণ হলে দল ব্যবস্থা নেবে।’’ নবুও জানাচ্ছেন, ব্যবসায়ীদের ক্ষতি না করে ফুটপাথ জবরদখলমুক্ত করা হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement