Hwker-less Digha Sea Beach

ভোগান্তি পর্যটকদের, সৈকত হবে হকারহীন 

পর্ষদ সূত্রের খবর, প্রথমে হকার সংগঠন এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে বৈধ হকারদের একটি নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:০৭
দিঘার সৈকতে হকার। নিজস্ব চিত্র 

দিঘার সৈকতে হকার। নিজস্ব চিত্র  keshabmanna23@gmail.com

উচ্ছেদ অভিযান আগেও হয়েছে একাধিকবার। তবুও দিঘার সৈকতে মেটেনি হকার সমস্যা। তাই, এ বছর শীতে পর্যটনের মরসুম শুরু হওয়ার আগে গোটা দিঘাকে ‘নো হকার্স জ়োন’ হিসাবে গড়তে উদ্যোগী দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ)। শুধু সৈকতের পাশে নয়, ওল্ড দিঘা এবং নিউ দিঘায় ১১৬ বি জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত রাস্তার পাশে থাকা হকারদেরও পসরা সাজিয়ে আর বসতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডিএসডিএ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

আগামী সোমবার বড়দিন। তারপর রয়েছে ইংরেজি বর্ষ বিদায় এবং নববর্ষ উদযাপন। ফলে চলতি সপ্তাহের শনিবার থেকেই সৈকতে পর্যটনের ভরা মরসুম শুরু হচ্ছে। তার আগে গোটা দিঘা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে এ বছর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে ডিএসডিএ। গত সপ্তাহে স্থানীয় পদিমা-১ এবং ২ গ্রাম পঞ্চায়েত, দিঘা ও দিঘা মোহনা থানার আধিকারিক এবং ব্লক প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক তারা করেছিল। সেখানে ডিএসডিএ-র পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পর্যটনের মরসুমে কোনও হকারদের বেআইনিভাবে বসতে দেওয়া হবে না। আর তারা বসলেও ওল্ড এবং নিউ দিঘা জুড়ে চলবে হকার উচ্ছেদ অভিযান।

পর্ষদ সূত্রের খবর, প্রথমে হকার সংগঠন এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে বৈধ হকারদের একটি নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ওই তালিকায় অতিরিক্ত কাউকে যুক্ত করা বা বাদ দেওয়া যায় কি না, সে ব্যাপারে তারা মতামত জানাবে পর্ষদকে। এর ভিত্তিতে বৈধ হকারদের যে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হবে, তা মেনে সচিত্র পরিচয় পত্র বিলি করা হবে। আর ওই পরিচয়পত্র প্রাপকেরাই পর্ষদের নির্দিষ্ট করে দেওয়া কয়েকটি জায়গাতে পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন। বাকিদের পসরা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিস দেওয়া হবে। তাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না সরলে অভিযান করা হবে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক সৈকত হাজরা বলছেন, ‘‘পর্যটকদের অসুবিধের কথা মাথায় রেখে দিঘাকে ‘নো হকার্স জ়োন’ বানানো হচ্ছে। আমাদের কাছে একটি তালিকা রয়েছে, সেই তালিকা ধরে সচিত্র পরিচয় পত্র দেওয়া হবে। আর যে হকারেরা পুনর্বাসন পাননি, তাঁদের আগামী দিনে স্টল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে সৈকত শহর হকার সমস্যায় জর্জরিত। সৈকত জুড়ে দিনভর হকারদের দাপটে সমস্যায় পড়তে হয় পর্যটকদের। বেশ কয়েকবার প্রশাসনিকভাবে অভিযান চালিয়ে হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন স্টলও দেওয়া হয়েছে। তবে এর পরেও সৈকতের ধার জুড়ে গজিয়ে উঠেছে সারিসারি হকারদের পসরা। গত বছর বড়দিনের আগে এই হকার সমস্যা মেটাতে আন্দোলনে নেমেছিলেন স্থায়ী দোকানদারেরা। তা নিয়ে ধুন্ধুমার বেঁধে গিয়েছিল সৈকতে। যাতে এবার ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য আগেভাগে ডিএসডিএ-র এই উদ্যোগ বলেই দাবি প্রশাসনের।

প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পর্যটকেরা। উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা নিমু ভৌমিক বলছেন, ‘‘ছেলের পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে বলে সপরিবারে বেড়াতে এসেছি। দেখছি সন্ধ্যের পর সিবিচে পা রাখার জায়গাটুকুই নেই। যেদিকে তাকাই শুধু অস্থায়ী দোকান। প্রশাসন যদি ফুটপাথের উপর থেকে তাঁদের পুনর্বাসন দিয়ে অন্যত্র সরানোর উদ্যোগ নেয় তাতে দিঘা আরও অনেক বেশি সুন্দর লাগবে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement