Laxmi Bhandar Scheme

ভান্ডারে’ কবে টাকা, অপেক্ষায় ‘লক্ষ্মী’রা

সাধারণত, প্রতি মাসের শুরুতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যায়।তাহলে কেন দেরি? প্রশাসনের এক আধিকারিক মনে করাচ্ছেন, আবেদন এলে সবদিক খতিয়ে দেখা হয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:০১
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র সুবিধা পেতে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে আবেদন করেছিলেন গত সেপ্টেম্বরে। এখনও টাকা পাননি। কবে পাবেন জানতে দিন কয়েক আগে মেদিনীপুরে কালেক্টরেটে এসেছিলেন বছর পঞ্চান্নর ওই মহিলা। বলছিলেন, ‘‘একা থাকি। টাকাটা পেলে খুব কাজে লাগত।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক তাঁকে আশ্বাস দেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে!’’

Advertisement

শুধু ওই মহিলা নন, প্রকল্পের অর্থ সহায়তা পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন আরও কয়েক হাজার মহিলা। সূত্রের খবর, গত সেপ্টেম্বরে ও গত ডিসেম্বরের শিবিরে যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের কেউই এখনও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’ টাকা পাননি। গত ডিসেম্বরের শিবিরে এই প্রকল্পের সুবিধা চেয়ে আবেদন করেছেন জেলার প্রায় ১০ হাজার মহিলা। সেপ্টেম্বরে শিবির হয়েছিল ১ থেকে ১৬। ১৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরিষেবা প্রদানের নির্দেশ ছিল। তারপর শিবির হয় ১৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বর। এই দফার শিবিরে আবেদনকারীদের ২ থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পরিষেবা প্রদানের নির্দেশ রয়েছে।

সাধারণত, প্রতি মাসের শুরুতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যায়।তাহলে কেন দেরি? প্রশাসনের এক আধিকারিক মনে করাচ্ছেন, আবেদন এলে সবদিক খতিয়ে দেখা হয়। যেগুলি ঠিকঠাক, সেগুলি অনুমোদিত হয়। ত্রুটিযুক্তগুলি বাতিল হয়। তারপর অনুমোদিত আবেদনকারীর নাম প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পাঠানো হয়। এটা রাজ্য থেকেই হয়। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি শীঘ্রই এই প্রকল্পে অর্থ বিতরণ হতে পারে।’’

বর্তমানে পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় দশ লক্ষ মহিলা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র সুবিধা পাচ্ছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি। এক সময়ে জেলায় এই প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা ছিল ৮,৭৬,৮৬২। পরে নতুন করে জেলার আরও ১,১২,১৪৩ জন মহিলা প্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করেন। ফলস্বরূপ, এই প্রকল্পের উপভোক্তা সংখ্যা বেড়ে হয় ৯,৮৯,০০৫ জন। সূত্রের খবর, এই সময়ের মধ্যে আরও কয়েক হাজার মহিলা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের প্রাপ্য সুবিধা চেয়ে আবেদন করেছেন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলকে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে সাহায্য করেছে এই প্রকল্প। এই প্রকল্পে সাধারণ পরিবারের মেয়েরা মাসে ৫০০ টাকা করে, বছরে মোট ৬ হাজার টাকা পান। পিছিয়ে পড়া শ্রেণিভুক্তরা পান মাসে এক হাজার টাকা করে, বছরে মোট ১২ হাজার টাকা পাবেন।

আবেদন করেও টাকা মেলেনি। অপেক্ষায় কয়েক হাজার ‘লক্ষ্মী’। লোকসভা ভোটের আগে জেলায় এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার মুখোপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘‘রাজ্য বর্তমানে লক্ষ্মীছাড়া! লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থ সঙ্কুলান কোথা থেকে হবে!’’ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ বলেন, ‘‘জেলার প্রায় দশ লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুবিধা পাচ্ছেন। সংখ্যাটা কম নয়। আবেদন খতিয়ে দেখতে হয়। গত শিবিরে যাঁরা আবেদন করেছেন, নিশ্চিতভাবে তাঁরাও প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। এ ক্ষেত্রে তো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বৈধতাও যাচাই করতে হয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement