Kurumi Comunity Protest

কুড়মি আন্দোলনে অগ্রণী লক্ষ্মীমন্তরাও

ঝাড়গ্রাম জেলায় লক্ষ্মীর ভান্ডারে উপভোক্তা ২ লক্ষ ৮০ হাজার। আর ঝাড়গ্রাম লোকসভার অধীন ৭টি বিধানসভায় সংখ্যাটা সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি।

Advertisement
কিংশুক গুপ্ত  ও রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৪ ০৬:৫৮
আদিবাসী কুড়মি সমাজের গ্রাম কমিটির মহিলারা। সঙ্গে সংগঠনের রাজ্য যুব নেতা তুহিন মাহাতো। বেলপাহাড়ির বাকড়া গ্রামে।

আদিবাসী কুড়মি সমাজের গ্রাম কমিটির মহিলারা। সঙ্গে সংগঠনের রাজ্য যুব নেতা তুহিন মাহাতো। বেলপাহাড়ির বাকড়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

এতদিন পুরোভাগে ছিলেন পুরুষরা। এ বার অগ্রণী লক্ষ্মীমন্তরাও।পুরুলিয়ায় আদিবাসী কুড়মি সমাজের সমাবেশ সফল করতে গ্রাম ভিত্তিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহিলাদের। যাঁদের বেশিরভাগই লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের উপভোক্তা।

Advertisement

১০ মার্চ জাতিসত্তার দাবিতে হুলহুলি টাঁড়ে জমায়েতের ডাক দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। ভোটের আগে এই কর্মসূচি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সমাবেশের আগে ৮-৯ মার্চ দু’দিন ধরে সেখানে নানা কুড়মি সামাজিক সংগঠনের আভ্যন্তরীণ বৈঠক হবে। তৃণমূল-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কুড়মি নেতা-জনপ্রতিনিধিদেরও সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ১০ মার্চ আদিবাসী কুড়মি সমাজের ‘মূল মানতা’ (মুখ্য উপদেষ্টা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো প্রকাশ্য সমাবেশে কুড়মি সংগঠনগুলির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।

ঝাড়গ্রাম জেলায় লক্ষ্মীর ভান্ডারে উপভোক্তা ২ লক্ষ ৮০ হাজার। আর ঝাড়গ্রাম লোকসভার অধীন ৭টি বিধানসভায় সংখ্যাটা সাড়ে তিন লক্ষেরও বেশি। সম্প্রতি জঙ্গলমহলের তিন জেলায় এসে লক্ষ্মীর ভান্ডারই যে তাঁর তুরুপের তাস তা স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সরকার ক্ষমতায় থাকলে মহিলারা ‘জনম জনম’ প্রকল্পের টাকা পাবেন বলে জানিয়েছেন। অথচ সেই লক্ষ্মীরাই কুড়মি সমাবেশের মাঠভরাতে চলেছেন। সূত্রের খবর, সমাবেশ সফল করতে ঝাড়গ্রাম জেলার কুড়মি অধ্যুষিত এলাকায় মহিলাদের গ্রাম কমিটি বাড়ি-বাড়ি চাল-ডাল সংগ্রহ করছে। তা দিয়ে সমাবেশমুখী কুড়মিদের পেট ভরানো হবে। সংগ্রহ করা হচ্ছে যাতায়াতের খরচও। অন্য কুড়মি সংগঠনও এই পন্থায় পাথেয় সংগ্রহ করছে।

বেছে বেছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপকদের নিয়ে কমিটি গড়ার বিষয়টি মানেননি আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য যুব সম্পাদক তুহিন মাহাতো। তবে তিনি বলছেন, ‘‘উন্নয়ন নিয়ে আমাদের বিরোধ নেই। তবে সমাজের ডাকে মহিলারাও এগিয়ে এসেছেন।’’ রাজেশ মাহাতোর নেতৃত্বাধীন কুড়মি সমাজের (পশ্চিমবঙ্গ) মহিলা শাখার নেত্রী তাপসী মাহাতোর কথায়, ‘‘আমরা জাতিসত্তার অধিকারের জন্য আন্দোলন করছি। ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে ওই দিন বিপুল সংখ্যক মহিলা সমাবেশে যাবেন।’’

পুরুলিয়ার সমাবেশে লোকজন নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ পাল বলছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত অগ্রিম দিয়ে ২১টি বাস ভাড়া নিয়েছেন কুড়মিরা।’’ তুহিন জানালেন, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে মোট দেড়শো বাস নেওয়া হচ্ছে। কিছু টুরিস্ট বাসও ভাড়া নেওয়া হয়েছে। আড়াইশো ছোট গাড়ি নেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার প্রতিটি গ্রাম সংসদ এলাকা থেকে পুরুলিয়ার গাড়ি ছাড়বে। আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো জুড়ছেন, ‘‘প্রচুর মহিলা যাচ্ছেন পুরুলিয়ার সমাবেশে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement