শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতা এসে গত ২৭ অক্টোবর রাজ্যে দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেছিলেন। সে সময় এই অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা বঁধে দেওয়া হয়েছিল। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক ও কাঁথি, সাংগঠনিক জেলায় তিন লক্ষ করে সদস্য সংগ্রহ করতে হত। কিন্তু তেমন সাড়া মেলেনি। ফলস্বরূপ গত রবিবার ফের ‘মেগা সদস্য সংগ্রহ’ অভিযান করে বিজেপি। তাতে দলের সাংসদ, বিধায়ক ও জেলা কমিটির পদাধিকারী, মণ্ডল সভাপতিকে বিভিন্ন বুথে গিয়ে কর্মসূচি পালন করেন। এতে ভাল সাড়া মিলেছে বলে জেলা নেতৃত্বের দাবি। কিন্তু, বহু বুথে এখনও কর্মসূচি শুরু না হওয়ায় চিন্তা রয়েছে তাঁদের।
বিজেপি সূত্রের খবর, গত ২৭ অক্টোবর কর্মসূচি শুরুর পর গত শনিবার পর্যন্ত তমলুকে ২৯ হাজার ১৪২ জন সদস্য গেরুয়া শিবিরের সদস্য হয়েছে। সেখানে রবিবারের ‘মেগা’ অভিযানে একদিনেই ২১ হাজার ৭০০ জন দলের সদস্য পদ নিয়েছেন। ওই দিন তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে তমলুক ব্লকের নীলকুণ্ঠা ও সাউতানচক এলাকায় যান। এছাড়া, বিজেপি জেলা কমিটির সমস্ত পদাধিকারী দিনভর বিভিন্ন বুথে গিয়ে সদস্য সংগ্রহ করেছেন। জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত তমলুক সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির ৫১ হাজার সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। একই ভাবে রবিবারের অভিযানে কাঁথি সাংগঠনিক জেলাতেও ভাল সাড়া মিলেছে বলে দাবি।
অবশ্য এর পরেও সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই দূরে রয়েছে বলে মানছেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। এমনকী, তমলুক সাংগঠনিক জেলার ১৯৩৮টি বুথের মধ্যে এখনও অনেক বুথে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরুই হয়নি বলে অভিযোগ। এতে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের উদ্বেগ রয়েছে। তমলুক সাংগঠনিক জেলায় সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাবামদেব গুছাইত বলেন, ‘‘মেগা সদস্য সংগ্রহ অভিযানে ভাল সাড়া মিলেছে। একদিনেই ২১ হাজার ৭০০ সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। একাংশ বুথে এখনও সদস্য সংগ্রহ শুরু হয়নি।’’ কোনও কোনও বুথে অভিযান শুরু না হওয়ার প্রসঙ্গে বামদেবের দাবি, দলীয়ভাবে যে নির্দিষ্ট ‘অ্যাপে’র মাধ্যমেই নথি-সহ আবেদন করতে হবে, সেই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে একাংশ নেতৃত্ব সড়গড় হননি। এছাড়া, মোবাইলে ওই নির্দিষ্ট ‘অ্যাপ’ খোলায় নেটওয়ার্কের সমস্যা রয়েছে।
যে সব বুথে এখনও অভিযান শুরু হয়নি, সেখানে অবিলম্বে কর্মসূচি শুরু করতে জেলা, মণ্ডল নেতৃত্বদের বুথে বুথে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বিজেপির সক্রিয় সদস্য হওয়ার জন্য নেতৃত্বকে ন্যূনতম ১০০টি সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ওই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলে ‘সক্রিয় সদস্য’ পদের স্বীকৃতি মিলবে না।
আগামী ৩০ নভেম্বরে দুই জেলায় সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি? বিজেপির জেলা (তমলুক) সহ-সভাপতি তথা কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির যুগ্ম দায়িত্বপ্রাপ্ত আনন্দময় অধিকারী বলছেন, ‘‘সদস্য সংগ্রহ অভিযানের প্রথম দফার কর্মসূচি চলছে। ডিসেম্বরে দ্বিতীয় দফার কর্মসূচি হবে। তাই প্রথম দফায় সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যতটা সম্ভব এগিয়ে যেতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’’