তাজপুরে সমুদ্র তীরবর্তী সেই বিতর্কিত এলাকায় চলছে দোকান ঘর নির্মাণ। —নিজস্ব চিত্র।
ফের সরকারি জমি 'দখল' করে দোকান বসানোর অভিযোগ উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র তাজপুরে। এ ব্যাপারে মন্দারমণি উপকূল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বন দফতর।
প্রসঙ্গত, গত অগস্টে তাজপুরের সমুদ্র সৈকতে বন দফতরের জমিতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। মহিলা বন আধিকারিককে কুকথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক অখিল গিরি। তাঁকে মন্ত্রীত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময় তিনি সরকারি জমি দখল আটকাতে কড়া পদক্ষেপের বার্তা দিয়েছিলেন।
তবে, মন্দারমণিতে সম্প্রতি জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে জেলাশাসক ১৪০ টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দেওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে বেআইনি হোটেল মালিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে তাজপুরের জমি দখলের ক্ষেত্রেও কিছুটা ‘ব্যাকফুটে’ বন দফতরের কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে বন দফতরের কাঁথি মহকুমা রেঞ্জ আধিকারিক মনীষা সাউয়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ফোন করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি। তবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বন আধিকারিক সত্যজিৎ রায় বলেন,"নিজেদের দফতরের জমির সুরক্ষার জন্য রুটিন মাফিক যা পদক্ষেপ করার, সেটাই করা হয়েছে।"
তাজপুরের পাশেই আরেক পর্যটন কেন্দ্র মন্দারমণিতে সরকারি পাট্টা জমিতে বেআইনিভাবে গড়ে উঠেছে সারি সারি হোটেল। সেই সব হোটেল নিয়ে ডাকা শুনানি আপাতত স্থগিত রেখেছে কাঁথি মহকুমা প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার থেকে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়েছে তাজপুরে। মন্দারমণি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে তাজপুরে সৈকত সংলগ্ন বন দফতরের জমিতে খুঁটি পুঁতে স্থানীয় কিছু মানুষ দোকান বসাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এ দিন খবর পেয়ে শঙ্করপুর বিট অফিস থেকে বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। প্রাথমিকভাবে তাঁরা বাধা দেন। তা সত্ত্বেও রবিবার সেখানে ফের খুঁটি পুঁতে দোকান বসানো হয় বলে অভিযোগ। এরপর বন দফতরের এক স্থানীয় আধিকারিকের নেতৃত্বে চলে নজরদারি অভিযান। পরে মন্দারমণি উপকূল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্দারমণির অদূরে তাজপুর থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত এলাকায় সমুদ্রের ভাঙন তীব্র আকার নিয়েছে। তাজপুরে ভাঙন কবলিত সমুদ্রসৈকতে পাথর ফেলে স্থানীয় কিছু লোক অস্থায়ী দোকান তৈরি করছিলেন। এ ব্যাপারে রামনগর-১ ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি তথা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বিশ্বজিৎ জানা দাবি করেন,"যে অংশে সমুদ্রের পাড় ক্ষয় পাচ্ছে সেখানে গরিব তফসিলি পরিবারের লোকেরা অস্থায়ী দোকান তৈরি করছিলেন। সেটা কোনওভাবেই বন দফতরের জমি নয়। তাহলে এতে তাদের আপত্তি কোথায়?" যদিও এই দাবি মানতে চায়নি বন দফতর।