গাড়ির তেলে ২১ লক্ষ টাকা! বিতর্কে নেত্রী

২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মেয়াদকালে তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি পদে ছিলেন অপর্ণা ভট্টাচার্য।

Advertisement
আনন্দ মণ্ডল
চণ্ডীপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ ০৬:৩৪
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ঘুরেছে জনপ্রতিনিধির গাড়ির চাকা। তাই সরকারি কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ২১ লক্ষ টাকা! পাঁচ বছরে চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির জন্য বরাদ্দ গাড়ির তেলে এই বিপুল পরিমাণ খরচে চক্ষু চড়কগাছ অনেকেরই। উঠছে নানা প্রশ্ন। সভাপতি অবশ্য বলছেন, ‘‘প্রশাসনের হিসাবে অসঙ্গতি রয়েছে।’’

Advertisement

সম্প্রতি চণ্ডীপুরের এক বাসিন্দা সুপ্রভাত পাত্র তথ্য জানার অধিকার আইনে ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মেয়াদকালে গাড়ির তেল বাবদ সরকারি কত টাকা খরচ হয়েছিল, তা জানতে চেয়েছিলেন ব্লক প্রশাসনের কাছে। এই সংক্রান্ত নথিও চেয়েছিলেন সুপ্রভাত। গত ৩ মে ব্লক প্রশাসনের তরফে যুগ্ম বিডিও চিঠি দিয়ে সুপ্রভাতকে জানান যে, ওই মেয়াদে চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির গাড়ির তেলের বিল বাবদ ২১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭২০ টাকা দেওয়া হয়েছে। আর এই সংক্রান্ত নথি পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে ‘ক্যাশ সেকশনে’ রয়েছে।

তথ্য সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। সুপ্রভাত বলেন, ‘‘একজন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গাড়িতে পাঁচ বছরে প্রায় সাড়ে ২১ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। অর্থাৎ প্রতি বছর প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা গাড়ির তেল বাবদ সরকারি অর্থ ব্যয় হয়েছে।’’ সুপ্রকাশের দাবি, ‘‘ওই সময়ের মধ্যে ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতি ছিল। একাধিক দফায় লকডাউন হয়েছে। তা সত্ত্বেও তেল বাবদ এই বিপুল খরচ কী করে হয়!’’ ওই সময়ের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির গাড়ির তেল খরচের হিসেব নিয়ে জেলা প্রশাসনের তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছেন সুপ্রকাশ।

২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মেয়াদকালে তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি পদে ছিলেন অপর্ণা ভট্টাচার্য। বর্তমানে তিনি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে যথেচ্ছ গাড়ি ব্যবহার এবং বিদ্যুৎ খরচে রাশ টানার জন্য বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকেও তিনি একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তার পরেও একাংশ দফতরে গাড়ি ব্যবহারের খরচ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যেমনটা রয়েছে অপর্ণার ক্ষেত্রে।

অপর্ণা অবশ্য বলেন, ‘‘সভাপতি থাকার সময়ে গাড়ির তেলের খরচ মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যেই ছিল। তাতে বছরে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা করে পাঁচ বছরে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল। গাড়ির ব্যবহারের লগ বুক এবং তেলের খরচের হিসেব রয়েছে। যার গাড়ি তাঁকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে। এতে আমার ভূমিকা নেই।’’ এখানেই থামেননি অপর্ণা। আত্মপক্ষ সমর্থনে তাঁর যুক্তি, ‘‘সভাপতি থাকাকালীন প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজে হলদিয়া ও কলকাতায় বহুবার যেতে হয়েছিল। তবে এত খরচ ঠিক নয়। প্রশাসন থেকে যে হিসেব দিয়েছে তাতে অসঙ্গতি রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন
Advertisement