Kolkata Doctor Rape and Murder

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে পর পর ইস্তফা, সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের দাবি, পিছিয়ে গেল বৈঠকও

আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় কয়েক জন চিকিৎসকের নাম জড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৯
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দু’দিনের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের দু’দিনের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। —ফাইল চিত্র।

আরজি কর-কাণ্ডের আবহে রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে সদস্যেরা পর পর ইস্তফা দিচ্ছেন। সন্দীপ ঘোষ-সহ আরজি কর-কাণ্ডে নাম জড়ানো চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের দাবি উঠেছে। এই আবহে কাউন্সিলের বৈঠকও পিছিয়ে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার— দু’দিন এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। বুধবারই জানা গেল, বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার কারণ হিসাবে মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফে কিছু জানানো হয়নি।

Advertisement

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় নামের এক চিকিৎসক আগেই ইস্তফা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, বুধবার ইস্তফা দিলেন সুমন মুখোপাধ্যায়ও। তিনি কাউন্সিলকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, সন্দীপ এবং অন্যদের রেজিস্ট্রেশন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। তাতে কাউন্সিলের ভাবমূর্তি বজায় থাকবে। যদি তা না করা হয়, তবে এই চিঠিই তাঁর পদত্যাগপত্র হিসাবে ধরে নিতে বলেছেন চিকিৎসক।

চিঠিতে ওই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, সন্দীপ-সহ যাঁদের নাম আরজি কর-কাণ্ডে প্রকাশ্যে এসেছে, তাঁরা তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউন্সিল থেকে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা উচিত। তদন্ত চলাকালীনও যদি ওই সদস্যেরা কাউন্সিলের পদে থাকেন, তবে তিনি কাউন্সিলে থাকবেন না।

এর মাঝে মঙ্গলবার রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে কাউন্সিলের সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং সদস্যদের ইমেল করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, আপাতত বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কবে আবার এই বৈঠক হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে নাগরিক সমাজ। রাজনৈতিক প্রভাব দূরে রেখেই বিচার এবং নিরাপত্তার দাবিতে চিকিৎসকদের আন্দোলন চলছে। এই পরিস্থিতিতে আরজি কর-কাণ্ডে বেশ কয়েক জন চিকিৎসকের নামও জড়িয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, এসএসকেএমের অভীক দে-সহ একাধিক চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, অভীককে দেখা গিয়েছিল আরজি করের অপরাধস্থলের ভিডিয়োয়। এ ছাড়া, আরজি কর আবহে কিছু ভাইরাল অডিয়োয় বিরূপাক্ষকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে বলে অভিযোগ। বিরূপাক্ষকে বুধবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে সরিয়ে কাকদ্বীপে পাঠানো হয়েছে। সেখানেও তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। কেউ কেউ বলছেন, অভিযুক্ত সিনিয়র চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবি উঠতে পারে কাউন্সিলের বৈঠকে। ফলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সেই কারণেই বিতর্ক এড়াতে আপাতত বৈঠক না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

আরজি কর হাসপাতালে গত ৯ অগস্ট এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় এক জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে এক সিভিক ভলান্টিয়ার। আপাতত তিনি জেল হেফাজতে। আদালতের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই।

আরও পড়ুন
Advertisement