২১ জুলাই শহিদ দিবসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা দেখানো হবে দিল্লিতেও। ফাইল চিত্র
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শোনা যাবে দেশের রাজধানী দিল্লিতেও। গতবারের মতো এ বারও ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসে ভার্চুয়াল সমাবেশে বক্তৃতা করবেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই বক্তৃতা এলইডি স্ক্রিন মারফৎ সম্প্রচারিত হবে দিল্লিতেও। এই প্রথম এমন উদ্যোগ। রাজধানীতে তৃণমূলের দলীয় দফতরে সংসদীয় দলের উদ্যোগে মমতার বক্তৃতা সম্প্রচারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে এবারও শহিদ দিবসে ভার্চূয়াল সমাবেশ হবে। আমাদের দিল্লির অফিসে এলইডি স্ক্রিন লাগিয়ে সেখানেই নেত্রীর বক্তৃতা দেখানো এবং শোনানো হবে।’’
সুখেন্দুশেখরের আরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলের রাজ্যসভা ও লোকসভার সাংসদেরা সেখানে অবশ্যই হাজির থাকবেন। দিল্লিতে আমাদের দলের সমর্থকরাও রয়েছেন। তাঁরাও ওইদিন আমাদের সঙ্গে বসে নেত্রীর বক্তৃতা শুনবেন।যেহেতু কলকাতায় কোনও বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে না আর ১৯ জুলাই থেকে সংসদের অধিবেশনও শুরু হচ্ছে, তাই আমরা বেশিরভাগ সাংসদই দিল্লি থেকে ওই কর্মসূচিতে অংশ নেব।’’ ত্রিপুরা এবং অসমেও শহিদ দিবস পালিত হবে বলে তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর মিলছে।
প্রসঙ্গত, কোভিড সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের মতো এবারও কালীঘাটের দফতরে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও কয়েকজন শীর্ষনেতার উপস্থিতিতে হবে ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ। দলের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক বুথে স্ক্রিন লাগিয়ে মমতার বক্তৃতা সম্প্রচারের। কিন্তু এই প্রথম তৃণমূল সংসদীয় দলের তরফে দিল্লির দফতরে দলনেত্রীর বক্তৃতা সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কখনও দিল্লিতে মমতার বক্তৃতা দেখানো বা শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। এ বার তা হওয়ার পিছনে আরও কারণ দেখছে দলের একাংশ। ওই অংশের বক্তব্য, তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদ দখল করে জাতীয় রাজনীতিকে ‘পাখির চোখ’ করেছে তৃণমূল।তারা চায়। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি-কে দেশের ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে। সেই লক্ষ্যের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যাতে মমতার বক্তব্য দেশের রাজধানীতেও পৌঁছে দেওয়া যায়। একুশে থেকেই শুরু করা যায় চব্বিশের পদক্ষেপ।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এবার কোনও রাজ্যে সংগঠন গড়তে গেলে সেই রাজ্যে সরকার গঠনই লক্ষ্য হবে তৃণমূলের। রাজধানীতে মমতার বক্তৃতা সম্প্রচারের তৃণমূলের সিদ্ধান্তকে সেই লক্ষের অঙ্গ বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। যেভাবে বাংলায় মমতার নেতৃত্বে মোদী-শাহ জুটির প্রয়াস রুখে দিয়েছে তৃণমূল, তাতে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে দেশেরসামনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীই যে আসল ‘রাজনৈতিক বিকল্প’, তা জাতীয় স্তরে তুলে ধরতে চাইছে বাংলার শাসকদল।