তৃণমূল সাংসদ শান্তা ছেত্রী (বাঁ দিকে), মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজিপিএম নেতা অনীত থাপা (ডান দিকে)। ফাইল ছবি।
কার্শিয়াঙের টাউন হলে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমক খেলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তা ছেত্রী। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পাহাড়ের অন্য দলের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখার নিদান দিয়েছেন।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ছেড়ে সম্প্রতি নতুন দল গড়েছেন অনীত থাপা। মঙ্গলবার, মোর্চার রোশন গিরির পাশাপাশি অনীতও হাজির ছিলেন টাউন হলের প্রশাসনিক বৈঠকে। ছিলেন শান্তা-সহ তৃণমূলের পাহাড়ের নেতারাও। মঞ্চে বসেছিলেন মমতা। আর নীচে দর্শকাসনে বসেছিলেন শান্তা। বৈঠকের শুরুতে এক বার শান্তার কাছে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক বৈঠক, এখানে রাজনৈতিক কথা বলছি না। শান্তা, দলের কিছু নিয়ম আছে, তা মানতে হবে।’’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘পাহাড়ে কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে যাব না। অনীতরা আমার বন্ধু দল।’’ বৈঠকের শেষ লগ্নে ফের এক বার শান্তার কাছে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘‘শান্তা তুমি কাল অনীতের বিরুদ্ধে মন্তব্য করলে কেন?’’ জবাবে শান্তা জানান, কারও প্রশ্নের প্রেক্ষিতে ওই কথা বলেছিলেন তিনি। মমতা তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘অনেকেই অনেক কিছু বলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে। তুমি অনীতের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিতে গেলে কেন? এ ভাবে ঝগড়া কোরো না। সবাই মিলেমিশে পাহাড়ের উন্নয়ন করতে হবে। কেউ প্রশ্ন করলে বলবে, আমরা সকলে মিলে পাহাড়ের উন্নয়নে কাজ করব।’’ শান্তাকে কটাক্ষ করে মমতা আরও বলেন, ‘‘পুরসভা ভোটে তুমি জিততে পারোনি, তোমাকে সাংসদ করেছি। ঝগড়া কোরো না।’’
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সমতলের মতো পাহাড়েও যে বিজেপি-র বিরুদ্ধে তৃণমূলের লড়াই তা স্পষ্ট করার পাশাপাশি বিজেপি-বিরোধী সমস্ত দলকে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করছেন মমতা। এই প্রচেষ্টার অঙ্গ হিসেবে নিজেদের মধ্যে ঝগ়ড়া মিটিয়ে মিলেমিশে কাজ করার বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী, এমনটাই তাঁরা মনে করছেন। তাঁদের দাবি, অনীত মোর্চা ভেঙে নতুন দল গড়ায় ভোট ভাগাভাগির সম্ভাবনা আরও বাড়বে। গত বিধানসভার অভিজ্ঞতা বলছে, মোর্চার দুই শাখার মধ্যে ভোট ভাগাভাগির ফলে পাহাড়ের বেশির ভাগ আসনে বিজেপি জয় পেয়ে গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল-সহ পাহাড়ের সমস্ত বিজেপি বিরোধী দলকে এক ছাতার তলায় আনার প্রকাশ্য প্রয়াস শুরু করে দিলেন মমতা।