মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ঝাড়খণ্ডের রেল দুর্ঘটনা নিয়ে ফের কেন্দ্রের এনডিএ সরকারকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের উদ্দেশে মমতার প্রশ্ন, “এটাই কি সরকার চালানোর নমুনা?” রেলকে নিয়ে সরকারি উদাসীনতা থামবে কবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন এনডিএ এবং ইউপিএ আমলে রেলমন্ত্রী থাকা মমতা।
Another disastrous rail accident! Howrah- Mumbai mail derails in Chakradharpur division in Jharkhand today early morning, multiple deaths and huge number of injuries are the tragic consequences.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 30, 2024
I seriously ask: is this governance? This series of nightmares almost every week,…
মঙ্গলবার ভোর পৌনে চারটে নাগাদ ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হাওড়া থেকে মুম্বইগামী হাওড়া-সিএসএমটি এক্সপ্রেস। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার জেরে বেলাইন হয়ে গিয়েছে ট্রেনের অন্তত ১৮টি কামরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন যাত্রী। আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেলের তরফে ইতিমধ্যেই উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে রেলের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, যে জায়গায় মুম্বইগামী ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, তার কাছেই একটি মালগাড়িও বেলাইন হয়েছে। তবে এই দু’টি দুর্ঘটনার মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি। কেন দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধান শুরু করেছে রেল।
দুর্ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই নিজের এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন মমতা। সেখানে এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করার পাশাপাশি নিহতদের পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানান তিনি। তবে পোস্টের শুরুতেই কেন্দ্রের মোদী সরকারের উদ্দেশে তোপ দাগেন তিনি। মমতা লেখেন, “আমি প্রশ্ন করতে চাই, এটাই কি সরকার চালানোর নমুনা?” তার পরেই একের পর এক রেল দুর্ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “প্রতি সপ্তাহে দুঃস্বপ্নের এই ধারাবাহিকতা, রেললাইনে এই মৃত্যুমিছিল—কত দিন আর আমরা সহ্য করব? সরকারের উদাসীনতা কি শেষ হবে না?”
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুন উত্তরপ্রদেশের গোন্ডায় চণ্ডীগড় থেকে ডিব্রুগড়গামী ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসের অন্তত ১০-১২টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। এই দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। এই দুর্ঘটনার ঠিক এক মাস আগে, গত ১৭ জুন উত্তরবঙ্গের চটেরহাট এবং রাঙাপানি স্টেশনের মাঝে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। যে লাইন দিয়ে ওই এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলছিল, একই লাইনে চলার অনুমতি পাওয়া একটি মালগাড়ি পিছন থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে। ধাক্কার জেরে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের একাধিক কামরা উঠে পড়ে মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপর। লাইনচ্যুত হয় মালগাড়ির কামরাও। কাঞ্চনজঙ্ঘার গার্ড এবং মালগাড়ির চালক-সহ মোট ১০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন প্রায় ৫০ জন।
তারও আগে ২০২৩ সালের ২ জুন ওড়িশার বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়েছিল চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসও। দুর্ঘটনার অভিঘাতে একটি মালগাড়ির কামরার উপরে উঠে গিয়েছিল করমণ্ডলের ইঞ্জিন। দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়। একের পর এক রেল দুর্ঘটনার পর রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আগেই কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিল বিরোধী দলগুলি।