এসএসকেএমের উডবার্ন ব্লকের বাইরে গাড়ি থেকে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতালে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব ঠিকঠাক চললে বৃহস্পতিবারই তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার (প্রসিডিওর) হতে পারে। এসএসকেএমে আসার পর তাঁকে ইউসিএম ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর ডেক্সা স্ক্যান হওয়ার কথা। কিছু ক্ষণ বাদে ইউসিএম ভবন থেকে তাঁকে বেরোতে দেখা যায়। বেরোনোর সময় উপস্থিত এক রোগীর সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। তার পর গাড়িতে চেপে উডবার্ন ব্লকের দিকে রওনা হন। বিকেল নাগাদ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় অস্ত্রোপচার (প্রসিডিওর)-এর জন্য।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ কালীঘাটের বাড়ি থেকে এসএসকেএম হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন মমতা। ঠিক দুটো নাগাদ পৌঁছন হাসপাতালে। হাসপাতাল চত্বরে কিছুটা খুঁড়িয়েই হাঁটতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।
সোমবারই দুবরাজপুরের সভায় মোবাইলের মাধ্যমে ভাষণ দেওয়ার সময়ে মমতা নিজের অস্ত্রোপচারের কথা জানিয়েছিলেন। খবর ছিল, তার জন্য চলতি সপ্তাহের শেষেই হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার দুপুরেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে এলেন মমতা।
গত ২৭ জুন উত্তরবঙ্গে হেলিকপ্টারের জরুরি অবতরণের সময়ে বাঁ পা ও কোমরে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী। সে দিনই তাঁকে তড়িঘড়ি এসএসকেএমে আনা হয়েছিল। পরে ফিজ়িক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক রাজেশ প্রামাণিক এবং রেডিয়োলজির প্রধান চিকিৎসক অর্চনা সিংহের তত্ত্বাবধানে মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসা শুরু হয়। এমআরআই-এ দেখা যায়, বাঁ হাঁটুর লিগামেন্ট এবং হিপজয়েন্টের লিগামেন্টে চোট রয়েছে। বাঁ হাঁটুতে জল জমার চিহ্নও রয়েছে। কিন্তু সে দিন চিকিৎসকেরা হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরামর্শ দিলেও সেই প্রস্তাবে রাজি হননি মুখ্যমন্ত্রী। বরং, তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
হাঁটাচলা নিয়ন্ত্রণে রেখে বাড়িতেই মমতাকে বিশ্রামের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। এর পর থেকে বাড়িতে নিয়মিত মুখ্যমন্ত্রীর ফিজ়িয়োথেরাপি শুরু হয়। প্রতি দিন চার ঘণ্টা করে চলছে ওই থেরাপি। এসএসকেএম থেকে ফিজ়িয়োথেরাপিস্ট প্রতি দিন বাড়িতে গিয়ে সেই থেরাপি দিয়েছেন। চিকিৎসকেরাও তাঁকে কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে পরীক্ষা করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর ছিল, ফিজ়িয়োথেরাপিতে কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ার পরেই হাঁটুতে জল জমা ও লিগামেন্টের চোটের সমস্যা দূর করতে অস্ত্রোপচার (প্রসিডিওর) করার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছেন চিকিৎসকেরা। মুখ্যমন্ত্রীও সেই প্রক্রিয়া করাতে রাজি হন।
জানা যাচ্ছে, সে জন্য ভর্তি হলে হাসপাতালে উডবার্ন ব্লকের সাড়ে বারো নম্বর কেবিনে ভর্তি রাখা হবে তাঁকে। সম্ভবত ভর্তির পরের দিন ওই ব্লকেরই দোতলায় হবে অস্ত্রোপচার (প্রসিডিওর)। সূত্রের আরও খবর, তা করবেন ফিজ়িক্যাল মেডিসিনের চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচার (প্রসিডিওর)-এর পরে দিন দুই-তিনেক হাসপাতালে রাখা হতে পারে মুখ্যমন্ত্রীকে। তার পরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে, নিয়ম মেনে করতে হবে কিছু ব্যায়ামও।