বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি আন্দোলনকারী দেবাশিস হালদার। —নিজস্ব চিত্র।
আন্দোলনকারী ডাক্তার অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘‘৯ অগস্টের ঘটনাকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক খুন বলে মনে করি। সেই জায়গা থেকে বুধবার মুখ্যসচিবের কাছে বৈঠকে আমাদের কিছু দাবিদাওয়া জানিয়েছিলাম। তার পর বৃহস্পতিবার একটি নির্দেশিকা এসেছে। কেন্দ্রীয় হেল্পলাইন নম্বর, প্যানিক বাটন চালু হয়েছে। কিন্তু কলেজে কলেজে যে ভীতির পরিবেশ রয়েছে, সে বিষয়ে রাজ্যের তরফে কোনও সদর্থক ভূমিকা নেই। আমাদের ন্যায়বিচারের লড়াই তাই শেষ হয়নি। সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত আমাদের যে মিছিল হবে, তা যেন বিচারের দাবিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। আপামর জনসাধারণকে সেই মিছিলে আমাদের সঙ্গে থাকতে অনুরোধ করছি। রাজ্যে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, ডাক্তার হিসাবে তা আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে আমরা শুক্রবার থেকে ক্যাম্প করব। জরুরি পরিষেবাতেও যোগ দেব। তবে আমাদের সুরক্ষা যত দিন না নিশ্চিত করা হচ্ছে, তত দিন লড়াই জারি থাকবে।’’
প্রয়োজনে আবার পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু হবে। অবস্থান তুলে নেওয়ার ঘোষণা করতে গিয়ে এমনটাই জানালেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এখনও বেশ কিছু বিষয়ে তাঁদের দাবি নিয়ে সরকারের সদর্থক ভূমিকা দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার যে নির্দেশিকা এসেছে, তাতেও কিছু বিষয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার পরবর্তী শুনানির আগে ওই বিষয়গুলিতে পদক্ষেপ না করা হলে আবার পুরোদমে কর্মবিরতি শুরু করা হতে পারে।
সন্দীপ ঘোষ, টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারি আন্দোলনের ফল হিসাবেই দেখছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁরা মনে করে, এগুলি তাঁদের আন্দোলনের সুফল।
স্বাস্থ্যসচিবকে অপসারণের দাবি জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই দাবি এখনও পূরণ হয়নি। আরও কিছু দাবির ক্ষেত্রে সরকারের মৌখিক আশ্বাস মিললেও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি আন্দোলনকারীরা।
দেবাশিস আরও বলেন, ‘‘আমরা শুক্রবার থেকে নিজ নিজ কলেজে ফিরে গিয়ে এসওপি বানাব। যেখানে যেখানে খুব প্রয়োজন, সেগুলি বিভাগ ভিত্তিক ভাবে চিহ্নিত করে সেখানে কাজে যোগ দেব। বাকি জায়গায় কর্মবিরতি চলবে। প্রয়োজনে আবার পূর্ণ কর্মবিরতিতে ফিরতে পারি।’’
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকায় ক্যাম্প করবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুক্রবার থেকেই পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
‘‘মিছিলের পরে আমরা নিজ নিজ কলেজে ফিরে যাব। শনিবার থেকে জরুরি পরিষেবায় যোগ দেব। আংশিক কর্মবিরতি চলবে।’’ বললেন দেবাশিস হালদার।
শনিবার থেকে জরুরি পরিষেবায় যোগ দেবেন, জানালেন আন্দোলনকারীরা। সল্টলেকের কর্মবিরতি উঠবে।
অনিকেত বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের ডাক দিয়েছি। বিকেল ৩টেয়। বিচারের দাবিতে আমাদের সঙ্গে থাকুন, সকলের কাছে অনুরোধ।’’
কলেজে কলেজে ভীতির পরিবেশ সরাতে রাজ্য প্রশাসন কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করেনি।
আন্দোলনে কী কী পেয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তালিকা ধরে ধরে তা শোনালেন অনিকেত।
লড়াই চলবে। জানালেন আন্দোলনকারী অনিকেত মাহাতো।
ধর্নামঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। বলছেন অনিকেত মাহাতো।
শুরু হচ্ছে জুনিয়র ডাক্তারদের সাংবাদিক বৈঠক। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নামঞ্চ থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা।
জুনিয়র ডাক্তারদের সূত্রে খবর, জিবি বৈঠকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে। কর্মবিরতি নিয়ে ইতিবাচক কিছু বলতে পারেন আন্দোলনকারীরা।
কিছু ক্ষণের মধ্যেই সল্টলেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে সাংবাদিক বৈঠক করতে চলেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কর্মবিরতি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন তাঁরা।
হাসপাতালগুলির চিকিৎসা পরিকাঠামো এবং চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে বৃহস্পতিবার একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে নবান্ন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসানো হবে ‘প্যানিক বাটন’। অভ্যন্তরীণ অভিযোগগ্রহণ কমিটি (ইন্টারনাল কমপ্লেন্টস্ কমিটি) এবং অন্য কমিটিগুলিকে সম্পূর্ণ রূপে সচল রাখা হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় যাতে কোনও ভাবেই কোনও খামতি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে তৎপর রাজ্য সরকার। এই মর্মে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।
আরজি করে ধর্ষণ-খুনের বিরুদ্ধে আন্দোলন কোন পথে এগোবে, তা স্থির করতে বৃহস্পতিবার জুনিয়র ডাক্তারেরা জেনারেল বডির বৈঠক করেন। দীর্ঘ ক্ষণ সেই বৈঠক চলেছে।