সুপ্রিম কোর্টে বৃহস্পতিবার হল আরজি কর মামলার শুনানি। বাঁ দিক থেকে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি মনোজ মিশ্র। ছবি: সংগৃহীত।
হাসপাতাল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গায় সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য সরকার। এই নিয়ে প্রধান বিচারপতি বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই প্রশ্নের জবাব হলফনামার আকারে জমা দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে তিন দিন আগে হলফনামা জমা দিয়েছিল রাজ্য। বৃহস্পতিবার বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে উত্থাপিত হলেও শুনানি হয়নি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়ে আমাদের কাছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রিপোর্ট জমা পড়েছে। বৃহস্পতিবার এই বেঞ্চে অন্য মামলাও রয়েছে। তাই পরবর্তী দিন এই নিয়ে শুনানি হবে।’’
এক আইনজীবী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন।’’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনি কার হয়ে সওয়াল করছেন? শুনে মনে হচ্ছে, কোর্টে এখন ক্যান্টিনের মতো গল্প চলছে।’’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘বিচার শুরু হতে দিন।’’ এই প্রসঙ্গে তিনি জানান যে, মণিপুর থেকেও বেশ কিছু মামলা সরানো হয়েছিল।
এক আইনজীবী আর্জি সুপ্রিম কোর্টে জানান, পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এই মামলার শুনানি করা হোক।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ট্রায়াল বিচারকের যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে পুনরায় তদন্ত নিয়ে নির্দেশ দেওয়ার, তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার।’’
আরজি কর-কাণ্ডে একাধিক জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। এক জন মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার পর ৯০ দিন কেটে গিয়েছে। তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই।’’
প্রধান বিচারপতি জানান, জাতীয় টাস্ক ফোর্সের এই রিপোর্ট রাজ্যের মুখ্যসচিবেরা সব মেডিক্যাল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠাবেন।
জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ সওয়াল করে বলেন, ‘‘বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিদের এই টাস্ক ফোর্সে রাখা না হলে জাতীয় টাস্ক ফোর্স যে কারণে গঠিত হয়েছে, সেই কাজ সঠিক ভাবে হবে না।’’
আরজি করের ঘটনার পর চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে ১১ সদস্যের জাতীয় টাস্ক ফোর্স গঠন করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। টাস্ক ফোর্সের মূল লক্ষ্য হবে— চিকিৎসা পরিষেবায় যুক্ত নারী-পুরুষদের উপরে হিংসার ঘটনা রোধ এবং লিঙ্গ-বৈষম্য দূর করা, হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা। তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রকে পরামর্শ দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা দিল জাতীয় টাস্ক ফোর্স। ওই রিপোর্ট সব রাজ্যের মুখ্য সচিবকে পাঠানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। মুখ্যসচিবেরা ওই রিপোর্ট দেখে কোনও পরামর্শ থাকলে দিতে পারবেন। তারা ‘স্টেক হোল্ডার’-দের থেকে পরামর্শ নিতে পারবেন। রিপোর্টে দু’টি প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় টাস্ক ফোর্স। এক, যৌন হেনস্থা রোখা এবং দুই, শারীরিক হেনস্থা বন্ধের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে তারা। টাস্ক ফোর্স এ-ও প্রস্তাব দিয়েছে যে, এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নিতে হবে।
রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, ‘‘দ্রুত যাতে তদন্ত শেষ হয়, তা নিশ্চিত করা হোক। আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় চার্জ গঠন হয়েছে। রাজ্য চায়, আসল দোষী যাতে শাস্তি পাক।’’
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যাবে সিবিআই। আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে সিবিআই ষষ্ঠ স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিল। সেই রিপোর্ট পড়ছেন তিন বিচারপতি।
শুনানি শুরু হল সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি সিবিআইয়ের থেকে তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট দেখতে চাইলেন।
পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে আরজি কর মামলার শুনানি শুরু হবে সুপ্রিম কোর্টে।
সুপ্রিম কোর্টে বসল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলা শুনবে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা, বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ।
সুপ্রিম কোর্টে বৃহস্পতিবার আরজি কর মামলার শুনানি শুরু হতে চলেছে। এজলাসে উপস্থিত হয়েছেন আইনজীবীরা।
আগের শুনানিতে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, হাসপাতালে রোগীকল্যাণ সমিতি পুনর্গঠন করছে তারা। সেই সঙ্গে হাসপাতালের কাজকর্মে আরও স্বচ্ছতা আনতে ‘সার্বিক হাসপাতাল পরিচালন ব্যবস্থা’ (ইন্টিগ্রেটেড হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) চালু করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছিল। সেই ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে— অনলাইনে ওপিডি টিকিট বুকিং, ই-প্রেসক্রিপশন, অনলাইন রেফারাল সিস্টেম। সেই প্রক্রিয়া কত দূর এগোল, তা বৃহস্পতিবারের শুনানিতে রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে সুপ্রিম কোর্টে।
হাসপাতাল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গায় সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়েছিল রাজ্য সরকার। সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগকে ‘রাজনৈতিক স্বজনপোষণের সুন্দর পন্থা’ আখ্যা দিয়ে ছ’টি প্রশ্ন তুলেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সেই প্রশ্নগুলির জবাব বৃহস্পতিবার হলফনামা আকারে দিতে হবে রাজ্যকে।