স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান — ফাইল চিত্র।
আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে আসা মানে নিজেকে ছোট করা নয়। বড় করা। এটা আমার শেষ চেষ্টা।’’ তিনি আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নয়, আপনাদের দিদি হিসাবে এসেছি।” স্বাস্থ্য ভবনের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পর জুনিয়র ডাক্তারেরাও জানালেন, তাঁরা আলোচনায় বসতে চান।
দুপুর ১টা নাগাদ আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছন তিনি। গাড়ি থেকে নেমে সোজা পৌঁছে যান অবস্থানস্থলে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলার জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই বিচারের দাবিতে স্লোগান উঠতে থাকে।
শুক্রবার থেকেই ঘন ঘন বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ত্রিপলের ব্যবস্থা করা হলেও, বৃষ্টির মধ্যে তা কিছুটা সমস্যার মধ্যেই পড়তে হয়েছিল আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের। পরে তাঁদের জন্য কিছু চৌকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত বৃষ্টির মধ্যেই ত্রিপলের নীচে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান। শনিবার পঞ্চম দিনে পড়ল তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার জন্য নবান্ন পর্যন্ত গেলেও, শেষ পর্যন্ত বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। তারপর আবার স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ফিরে গিয়েছেন আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদল। শুক্রবার বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তাঁরা রাত কাটিয়েছেন রাস্তায়। নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে এখনও অনড় আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা।
বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে জানিয়েছিলেন, তিনি ইস্তফা দিতেও রাজি। কিন্তু বিচার নয়, আসলে ‘চেয়ার’ চাওয়া হচ্ছে। সে প্রসঙ্গে শুক্রবার আন্দোলনকারীরা আবারও বললেন, ‘‘আমরা চেয়ারকে সম্মান করি। পদত্যাগ আমরা চাইনি।” তাঁরা বলেন, “আমাদের একটাই চেয়ার, হাসপাতালের ওপিডির চেয়ার।’’
শুক্রবার সন্ধ্যায় অবস্থানস্থল থেকেই জুনিয়র ডাক্তারেরা আবার স্পষ্ট করতে চেয়েছেন যে তাঁদের আন্দোলন অরাজনৈতিক। বিজেপির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কিংবা অগ্নিমিত্রা পালকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়ার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। ধর্নাস্থল থেকেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে ‘কালিমালিপ্ত’ করার চেষ্টা করছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁদের বক্তব্য, এই আন্দোলনকে কেউ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইলে আগের মতোই প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
শুক্রবারই তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অভিযোগ তুলেছিলেন, স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে হামলার ছক কষা হচ্ছে। এই বিষয়ে একটি ফোনালাপের অডিয়োও প্রকাশ্যে এনেছিলেন তিনি (যদিও ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। এর পরই গড়ফার বাসিন্দা সঞ্জীব দাসকে গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর পুলিশ। তবে জুনিয়র ডাক্তারেরা আবার প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যদি কোনও হামলার ছক হয়ে থাকে তবে তা আটকানোর দায়িত্ব কার?’’