Partha Chatterjee

পুজোর আগে পার্থের জামিন মামলার নিষ্পত্তির সম্ভাবনা কম, জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট

জামিন মামলায় আগের শুনানিতে পার্থের নামের থেকে ‘প্রভাবশালী’ তকমা মোছার চেষ্টা করেন আইনজীবী। এরই মধ্যে সম্প্রতি প্রাথমিকের নিয়োগ মামলাতেও পার্থকে গ্রেফতার দেখিয়েছে সিবিআই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২৪
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন মামলা পুজোর আগে নিষ্পত্তির সম্ভাবনা কম। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার পার্থের জামিন মামলার বৃহস্পতিবার শুনানি ছিল হাই কোর্টে। বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, পুজোর আগে এই মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। পাশাপাশি, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থের বিরুদ্ধে ইডির মামলায় জামিনের আর্জিটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। শীর্ষ আদালতে সেটিরও পরবর্তী শুনানি রয়েছে ১৭ অক্টোবর। অর্থাৎ, পুজোর পরে। সে ক্ষেত্রে কোনও অবস্থাতেই পুজোর আগে জেলমুক্তি হচ্ছে না পার্থর। এই নিয়ে টানা তিনটি দুর্গাপুজো জেলেই থাকতে হচ্ছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। আগামী সোমবার হাই কোর্টে ফের উঠবে পার্থের জামিন মামলা।

Advertisement

প্রায় আড়াই বছর আগে, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। নিয়োগ দুর্নীতিতে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ২৩ তারিখ পার্থ এবং অর্পিতাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এর পরে ওই বছরেরই ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ার ‘ক্লাব টাউন হাইট্‌স’ আবাসনে অর্পিতার নামে থাকা দু’টি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে মোট ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা নগদে উদ্ধার করে ইডি। সঙ্গে প্রচুর টাকার গয়না। ইডির দাবি, অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদে মোট ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ৫ কোটি ৮ লাখ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। সঙ্গে সাতটি অন্য দেশের মুদ্রাও।

ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলাতেও পার্থ-সহ সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিংহ-সহ বেশ কয়েকজন শিক্ষাকর্তা গ্রেফতার হয়েছিলেন। সিবিআইয়ের দায়ের করা ওই মামলায় জামিন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর পার্থের জামিন মামলার শুনানি ছিল হাই কোর্টে।

গত শুক্রবারের শুনানিতে পার্থের নামের থেকে ‘প্রভাবশালী’ তকমা মোছার চেষ্টা করেন তাঁর আইনজীবী। পার্থের জামিনের বিরুদ্ধে এত দিন সিবিআইয়ের অন্যতম প্রধান যুক্তি ছিল, তিনি প্রভাবশালী। জামিনে মুক্তি পেয়ে গেলে তিনি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। সাক্ষীদের উপরও প্রভাব খাটাতে পারেন। নষ্ট করতে পারেন তথ্যপ্রমাণ। শুক্রবারের শুনানিতে সিবিআইয়ের এই যুক্তি উড়িয়ে দেন পার্থের আইনজীবী। তাঁর সওয়াল, পার্থ এখন মন্ত্রী নন। কোনও রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাও তাঁর পাশে নেই। তিনি এখন একা। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে যে ‘প্রভাবশালী’ তকমা রয়েছে, তা সঠিক নয়। এ সবের মধ্যেই সম্প্রতি প্রাথমিকে নিয়োগের মামলাতেও পার্থকে গ্রেফতার দেখিয়েছে সিবিআই।

আরও পড়ুন
Advertisement