দক্ষিণ কলকাতার পথে নামল বিজেপি ও বামেরা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
এক দিকে দলীয় কর্মীর উপরে আক্রমণের প্রতিবাদ এবং অন্য দিকে শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদে দক্ষিণ কলকাতার পথে নামল বিজেপি ও বামেরা।
রাজ্য বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের অংশ হিসেবে গত ৮ জানুয়ারি রাসবিহারী মোড়ে সদস্য সংগ্রহ করছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানে ছিলেন বিজেপির কলকাতা দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি মহম্মদ হানিফ। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস ‘আশ্রিত’ দুষ্কৃতীরা আক্রমণ চালিয়ে সদস্য সংগ্রহের শিবির ভাঙচুর করে। আক্রান্ত হন হানিফ। তাঁর হাত ভেঙে যায়। সেই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার দেশপ্রিয় পার্ক থেকে শুরু করে টালিগঞ্জ থানা হয়ে রাসবিহারী মোড় পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করেছে বিজেপি। উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, জেলা সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য-সহ অন্যেরা। মিছিল শেষে রাসবিহারী মোড়ে সভা করার কথা থাকলেও পুলিশের অনুমতি মেলেনি। শেষপর্যন্ত ম্যাটাডোরের উপরে সভা হয়। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, “দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে এক দিকে চলে গুন্ডা-রাজ, অন্য দিকে চলে পুলিশি-রাজ! বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা চলে। কোনও কার্যক্রম করতে দেওয়া হয় না।”
শহরে বেআইনি নির্মাণের প্রতিবাদে এ দিনই পথে নেমেছিল বামেরা। কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের হেলে যাওয়া বাড়ি এবং সাধারণ মানুষের হয়রানির প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিদ্যাসাগর কলোনিতে মিছিল ও সভা ছিল বামফ্রন্টের। প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার, রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত, সৃজন ভট্টাচার্য, আরএসপি নেতা দেবাশিস মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। দলীয় তহবিল বৃদ্ধি এবং মুনাফার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের জীবনকে বাজি রাখছে বলে অভিযোগ করেন বাম নেতৃত্ব। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এ দিনই নেতাজিনগরের ঘটনার প্রেক্ষিতে মন্তব্য করেছেন, ‘‘বাম আমলের পাপ বহন করতে হচ্ছে!’’ কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য পাল্টা বলেছেন, “১৪ বছর তৃণমূলের পুরবোর্ড কী করছিল? কেন স্থানীয় পুর প্রতিনিধি পুরসভাকে জানালেন না?” সৃজনের দাবি, “এটা তৃণমূল-সিপিএম-বিজেপির বিষয় নয়। বহু যত্ন করে, বহু রক্ষক্ষয়ী ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে বামেরা এই উদ্বাস্তু কলোনিগুলো গড়ে তুলেছিল। সেগুলো বাঁচাতে কলোনির মানুষকে একজোট হতে হবে।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ দিনই বীরভূমে মন্তব্য করেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করুন না কেন, কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন অবৈধ নির্মাণ আছে এবং সেই ক্ষেত্রে পুর-প্রতিনিধিরা টাকা নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত সেখানকার পুরপ্রতিনিধির কান ধরে জেলে ঢোকানো!”