—প্রতীকী চিত্র।
বিয়ের রেজিস্ট্রির জন্য দেওয়া নাগরিকদের আধার কার্ডের নম্বর এবং বায়োমেট্রিক তথ্য ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল আইন দফতর। সরকারি ওয়েবসাইট থেকে নাগরিকদের তথ্য হাতিয়ে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের তথ্য নিয়ে নানা অপকর্ম করছেন ইন্টারনেট জগতের অপরাধীরা। যাতে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি আবার ব্যাঙ্কে রাখা গচ্ছিত টাকাও লোপাট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে ভুরি ভুরি। গত কয়েক বছর ধরে এই সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়ে আইন দফতরে। তারপরেই এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ হিসাবে বিয়ের জন্য দেওয়া যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইট থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য ২০১৯ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে রেজিস্ট্রি বিয়ের জন্য যাবতীয় তথ্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করার কাজ শুরু হয়। নাগরিকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে চালু হয় একটি পোর্টাল। যেখানে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে পারতেন পাত্র-পাত্রীরা। পরে বিয়ের সময় পাত্র-পাত্রীদের সঙ্গে বিয়ের সাক্ষীদের আধার কার্ড নম্বর-সহ হাতের আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক প্রমাণ হিসাবে ওয়েবসাইটে রাখা হত।
বিয়ের রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে আধার সংক্রান্ত নথি জমা করা বাধ্যতামূলক, তেমনই বায়োমেট্রিক যাচাই করার জন্য আঙুলের ছাপও দিতে হয় পাত্র-পাত্রীকে। এর থেকে বড় রকমের বিপত্তির ঘটনা ঘটেছে প্রায় রাজ্যের সব প্রান্তেই। রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের সাইবার বিভাগের কাছে এই ধরনের বিষয়ে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ছে। তথ্য বেহাত হলে অজান্তেই জালিয়াতি চক্রের ফাঁদে পড়তে পারেন যে কোনও ব্যক্তিই। দেখা যাচ্ছে, ইন্টারনেট জগতের অপরাধীরা সরকারি ওয়েবসাইট গুলি থেকে নাগরিকদের তথ্য চুরি করে তাদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করার পাশাপাশি, ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকাও অনলাইনে সরিয়ে নিচ্ছে। রাজ্যের সাধারণ মানুষকে এই জালিয়াতির হাত থেকে বাঁচাতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে আইন দফতর। এই ধরনের অপরাধ রুখতে বিবাহ সংক্রান্ত পোর্টাল থেকে আধার ও বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত সব তথ্য সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। ফলে পোর্টালে ঢুকলে যে কেউ আর বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আধার কার্ডের নম্বর ও বায়োমেট্রিক তথ্য পাবেন না ।
আইন দফতর সূত্রে খবর, সাবধানতা অবলম্বন করতে এ বার থেকে বিয়ের সার্টিফিকেটের উপরে আঙুলের ছাপের ছবি রাখা হবে না। সেই জায়গায় আঙুলের ছাপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হবে। আইন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এখন থেকে আর বিয়ের রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত তথ্য অসংরক্ষিত ভাবে রাখা হবে না। আধার ও বায়োমেট্রিক সংক্রান্ত যে সব তথ্য বিয়ের প্রমাণ হিসাবে নেওয়া হবে, তা আইন দফতরের নিরাপদ জিম্মায় থাকবে। তাই তথ্য চুরি বা নকল করার সুযোগ থাকবে না। এমনকি কখনও যদি বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত পোর্টাল হ্যাক হয়ে যায়, তাহলেও এই সংক্রান্ত নথি কোনও ভাবেই জালিয়াতদের নাগালের মধ্যে আসবে না।