Shahjahan Sheikh Arrested

‘সৌজন্যে অভিষেক’! ৫৫ দিন পরে শাহজাহানের গ্রেফতারিতে সেনাপতিকেই কৃতিত্ব দিচ্ছে শাসক তৃণমূল

শুক্রবার সকালে এক্স হ্যান্ডলে কুণাল ঘোষ লেখেন, “আদালতের বাধা ছিল, পুলিশ কাজ করতে পারেনি।” একই সঙ্গে তিনি লেখেন “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে আদালত বাধা সরিয়েছে।”

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:১২
Kunal Ghosh gives credit to Abhishek Banerjee after Shahjahan Sheikh arrested by police

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।

সন্দেশখালির ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ ৫৫ দিন পর গ্রেফতার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। শাহজাহানের গ্রেফতারির জন্য পরোক্ষে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই কৃতিত্ব দিচ্ছে শাসক তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সকালে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ লেখেন, “আদালতের বাধা ছিল, পুলিশ কাজ করতে পারেনি।” তার পরেই তিনি লেখেন “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে আদালত বাধা সরিয়েছে। পুলিশ যা করার করেছে।”

Advertisement

পরে কুণাল বলেন, “আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছিলেন, মহামান্য হাই কোর্টের রায়ের একটি অংশের জন্যই পুলিশের হাত-পা বাঁধা হয়ে গিয়েছে। পুলিশ এ সংক্রান্ত (শাহজাহান সংক্রান্ত) মামলায় কোনও পদক্ষেপ করতে পারছে না।” তার পরই কুণালের সংযোজন, “অভিষেক বিষয়টি প্রকাশ্যে আনার পর আদালত সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে এবং পুলিশকে কাজ করার ছাড়পত্র দেয়।’’

পরে এক্স হ্যান্ডলে আরও একটি পোস্ট করে বিজেপিকেও আক্রমণ করেন কুণাল। লেখেন, “রাজ্য পুলিশ তো কাজ করল। এ বার সিবিআই নারদ মামলায় সিবিআইয়ের এফআইআর-নাম থাকা শুভেন্দু অধিকারী এবং আলকেমিস্ট চিটফান্ডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর মিঠুন চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করুক।”

শাহজাহানের গ্রেফতারির খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই অভিষেককে কৃতিত্ব দিয়ে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সাকেত গোখলেও। তিনি লেখেন, “আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সঠিক ভাবেই চিহ্নিত করেছিলেন, হাই কোর্টের নির্দেশের জন্য পুলিশ আটকে যাচ্ছে।” তার পরই সাকেত লেখেন, “আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম যে, হাই কোর্ট পুলিশের হাত খুলে দিলে, কয়েক দিনের মধ্যেই শাহজাহান শেখ গ্রেফতার হবেন।”

সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছিলেন, কোর্টই পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে। না হলে রাজ্য সরকারের পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারে। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ বলেছিলেন, “শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। ইডি তাঁকে ধরতে পারেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওই এফআইআরের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। ফলে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে আদালতই।’’

গত সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট জানায়, তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করতে পারবে রাজ্যের পুলিশ। কোনও স্থগিতাদেশ তাতে দেওয়া হয়নি। এই সংক্রান্ত মামলায় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের মন্তব্য, ‘‘স্পষ্ট ভাবে বলছি, পুলিশকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ইডির মামলায় সিট গঠনের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। আমরা পুলিশকে বলিনি, যে গ্রেফতার করা যাবে না।’’ বুধবার প্রধান বিচারপতি বলেন, “সিবিআই, ইডি এবং রাজ্য পুলিশ যে কেউ শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করতে পারে।”

হাই কোর্টের শেখ শাহজাহান সংক্রান্ত নির্দেশ এবং প্রধান বিচারপতির মন্তব্যের পরে শাসক তৃণমূল সোমবার আবার দাবি করে, আদালতের কারণেই শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারেনি রাজ্য পুলিশ। ‘জট’ কেটেছে। সাত দিনের মধ্যে শাহজাহান গ্রেফতার হবেন। তার পরে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ লিখেছিলেন, ‘‘আদালতের আইনি জটেই বিষয়টি আটকে ছিল। তার সুযোগে রাজনীতি করছিল বিরোধীরা। আজ হাই কোর্ট সেই জট খুলে পুলিশকে পদক্ষেপে অনুমোদন দেওয়ায় ধন্যবাদ। সাত দিনের মধ্যে শাহজাহান গ্রেফতার হবেন।’’ প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতির মন্তব্য এবং তৃণমূলের তরফে শাহজাহানকে সাত দিনের মধ্যে গ্রেফতার করার কথা বলার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হলেন সন্দেশখালির ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা।

আরও পড়ুন
Advertisement