Durga Puja 2023

উমা এসে পড়লেন বাপের বাড়ি, সূর্য ডুবতেই ভিড় বাড়ল কলকাতায়, তবে রাস্তাঘাট মোটামুটি সচল

কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যানজটে শহর স্তব্ধ হয়ে যায়নি। বড় পুজোগুলি দেখতে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। তাঁরা হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছেন বলে বিঘ্নিত হচ্ছে গাড়ি চলাচল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ২০:০৭
image of crowd

ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় ভিড় কলকাতার রাস্তায়। — ফাইল চিত্র।

টালা প্রত্যয় থেকে শ্রীভূমি হয়ে নাকতলা উদয়ন সংঘ— ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় এ ডাকে আমায় দেখ তো ও ডাকে আমায়। আর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে মণ্ডপে ভিড় করেছেন হাজার হাজার মানুষ। চিরাচরিত ভিড় টিকিয়ে রেখেছে একডালিয়া, সিংহী পার্ক থেকে বাগবাজার সার্বজনীনও। ভিড়ের প্রতিযোগিতায় কোনও অংশে পিছিয়ে নেই মহম্মদ আলি পার্ক, তেলেঙ্গা বাগান, বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ থেকে চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সংঘ। মণ্ডপের ভিড় স্বাভাবিক ভাবে নেমেছে পথেও। বড় পুজোগুলিতে যাওয়ার রাস্তায় তীব্র যানজট। তবে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়, এমনটাই জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ।

Advertisement

শুক্রবার, ষষ্ঠীতেও খোলা ছিল বহু অফিস। সে কারণে নিত্যযাত্রীর ভিড় ছিল রাস্তায়। তবে সকাল থেকে রাস্তায় ঢল নেমেছিল দর্শনার্থীদের। সন্ধ্যার পর তা আরও বেড়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, রাতে ভিড় আরও বাড়বে।

ষষ্ঠীর সকাল থেকে রুবি মোড় থেকে রাসবিহারীর রাস্তায় ছিল তীব্র যানজট। সন্ধ্যার পর থেকে তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই রাস্তাতে রয়েছে বোসপুকুর শীতলা মন্দির, একডালিয়া, সিংহী পার্ক, হিন্দুস্তান পার্ক, ত্রিধারা সম্মিলনীর মতো পুজো। প্রতি বারের মতো এই পুজোগুলিতে চতুর্থী থেকে ভিড় করেছেন হাজার হাজার মানুষ। পুলিশ সূত্রে খবর, দর্শনার্থীদের রাস্তা পারাপারের কারণে ওই পথে তীব্র যানজট। তবে গাড়ি থমকে নেই। ধীর গতিতে চলছে। সে কারণে রুবি থেকে গড়িয়াহাট যেতে এমনি সময়ে যেখানে ২০ মিনিট থেকে আধ ঘণ্টা লাগে, সেখানে ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় অন্তত এক ঘণ্টা সময় লাগছে। গড়িয়াহাট থেকে রাসবিহারী যাওয়ার রাস্তায় ভিড় প্রায় দ্বিগুণ। সিংহী পার্ক, একডালিয়া, হিন্দুস্তান পার্ক, ত্রিধারা দেখে বার হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। তার প্রভাবে রাস্তায় ধীর গতিতে চলছে যান।

এ দিকে রাসবিহারী ক্রসিংয়েও যানজট এতটুকু কম নয়। বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, চেতলা অগ্রণীর ঠাকুর দেখতে সেই পথেই যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। ওই দুই মণ্ডপেও ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় ভিড় চোখে পড়ার মতো। দক্ষিণের নাকতলা উদয়ন সংঘ, সন্তোষপুর লেকপল্লি, যোধপুর পার্ক, বাবু বাগানেও ভিড় নেহাত কম নয়। কম নয় দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস।

পুজোর ভিড় কম নয় উত্তর এবং মধ্য কলকাতাতেও। মধ্য কলকাতায় মূলত কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজো দেখার ভিড়। জানবাজারে রানি রাসমণির বাড়ির পুজো, কলুটোলা স্ট্রিটে মতি শীলের বাড়ির পুজো দেখার জন্য ষষ্ঠীর সন্ধ্যাতেও ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। তার প্রভাব পড়েছে সেন্ট্রাল এভিনিউতে। ওই পথে ধীরে এগিয়েছে গাড়ি। রাতের দিকে এই গতি আরও কমবে বলেই মনে করছে কলকাতা পুলিশ। সেন্ট্রাল এভিনিউ যত এগিয়েছে, তত বেড়েছে ভিড়। বাগবাজার, শোভাবাজার রাজবাড়ি, কাশী বোস লেন, নলিন সরকার স্ট্রিটের পুজোয় প্রতি বারের থেকে এতটুকু কম হয়নি ভিড়। তবে চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল টালা প্রত্যয়ে। সে কারণে রাস্তাতেও রয়েছে তীব্র যানজট।

তবে ভিড়ের প্রতিযোগিতায় উত্তর-দক্ষিণের সঙ্গে নাগাড়ে পাল্লা দিচ্ছে লেকটাউন। শ্রীভূমির ঠাকুর দেখার ভিড়ের চাপে বিমানবন্দরগামী রাস্তায় ধীর গতিতে চলছে গাড়ি। আধ ঘণ্টার রাস্তা পার হতে সময় লাগছে এক ঘণ্টা। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যানজটে শহর স্তব্ধ হয়ে যায়নি। গতি ধীর হলেও সচল রয়েছে। বড় পুজোগুলি দেখতে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। তাঁরা হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছেন বলে বিঘ্নিত হচ্ছে গাড়ি চলাচল। সে কারণে গড়িয়াহাট, দেশপ্রিয় পার্ক, রাসবিহারী এভিনিউ, সেন্ট্রাল এভিনিউ, লেক টাউনের মতো রাস্তায় যানজট বেশি। তবে অনিয়ন্ত্রিত নয়। রাত হলে এই ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছে পুলিশ। সপ্তমী থেকে তা কয়েক গুণ হবে বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। তবে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য কলকাতার রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সে কারণে ভিড় বাড়লেও থমকে থাকবে না তিলোত্তমা।

আরও পড়ুন
Advertisement