Jadavpur University Hostel

অবশেষে প্রথম বর্ষের আলাদা ছাত্রাবাস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে

যাদবপুরের ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায় জানিয়েছেন, ২০২৪-এ স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়া নবাগত এবং তাঁদের অভিভাবকদের আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপ্রাঙ্গণটির ভিতরেই প্রথম বর্ষ আলাদা হস্টেলে থাকবে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১১
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেল। —ফাইল চিত্র।

আজ, বৃহস্পতিবার প্রথম বর্ষের নবাগতেরা যাদবপুরে আসার দিনেই পড়ুয়াদের জন্য স্বস্তির খবর! নবীন বরণের আবহে এই নবাগতদের আত্মবিশ্বাস জোগাতে এবং বৃহত্তর সমাজের কাছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সদর্থক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যাদবপুরের বহু দিনের চাহিদা মতো প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য স্বতন্ত্র ছাত্রাবাস তৈরির কাজটাও অবশেষে শেষ করতে পেরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা।

Advertisement

ইউজিসি-র সুপারিশ অনুযায়ী, বহু বছর ধরেই যাদবপুরকে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের আলাদা ছাত্রাবাসে রাখার কথা বলা হয়েছিল। ঠিক এক বছর আগে মেন হস্টেলে ভয়াবহ র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় নদিয়া থেকে আসা বাংলা বিভাগের এক ছাত্রের তেতলা থেকে পড়ে মৃত্যু, গোটা দেশেই যাদবপুরের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়। তখন প্রথম বর্ষের ছাত্রদের আলাদা হস্টেলের সংস্থান করতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা নিয়েও অভিযোগের আঙুল ওঠে।
এর ঠিক এক বছর বাদে কার্যত শাপমুক্তি ঘটছে যাদবপুরের।

যাদবপুরের ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায় জানিয়েছেন, ২০২৪-এ স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়া নবাগত এবং তাঁদের অভিভাবকদের আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাপ্রাঙ্গণটির ভিতরেই প্রথম বর্ষ আলাদা হস্টেলে থাকবে। রজত বলেন, ‘‘ঠিক হয়েছে, ক্যাম্পাসের ভিতরে ওল্ড পিজি এবং নিউ ব্লক হস্টেলেই থাকবে প্রথম বর্ষ। প্রথমটিতে ৯০ জন এবং দ্বিতীয়টিতে ৭০ জন ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা। হস্টেলে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। হস্টেলের সুপার ছাত্রাবাসেই থাকবেন। এবং যাদবপুরের ক্যাম্পাসের আবাসনের বাসিন্দা কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক দিগন্ত
সাহা প্রথম বর্ষের ছাত্রদের হস্টেলের ওয়ার্ডেনের দায়িত্বও পালন করবেন।’’

আজ, বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান বিভাগের নবাগতেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা শুরু করছেন। ৫ অগস্ট কলা বিভাগ এবং তার পরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রদের আসার কথা। নবাগতেরা আসার আগে মঙ্গলবারই তড়িঘড়ি ডিন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) কর্তারা, হস্টেল অ্যালোকেশন কমিটির সদস্যেরা মিলে প্রথম বর্ষের জন্য চিহ্নিত হস্টেলগুলি খালি করেন। ঠিক হয়েছে, নবাগতেরা দু’বছর এক হস্টেলে থাকবেন।
গত বছরের র‌্যাগিং-কাণ্ডের পরেও অবশ্য কিছু পদক্ষেপ করেছিলেন যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। তখন প্রথম বর্ষের ছাত্রেরা ক্যাম্পাসের ভিতরের ছাত্রাবাসে একটি আলাদা অংশ
বা উইংয়ে থাকতেন। কোল্যাপসিবল গেটের ওপাশে ছিল দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষ। এ বছর নবাগতেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে এই ব্যবস্থাটি আরও নিখুঁত করে
তোলা হচ্ছে।

যাদবপুরের ডিন জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টিও অবহেলা করছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসের ভিতরে নিউ বয়েজ় হস্টেলে থাকবেন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা (৭০ জন)। শিক্ষাপ্রাঙ্গণের নবগঠিত হস্টেল বাড়ি জেপিজে বিল্ডিংয়েও দ্বিতীয় বর্ষের বাকি ছাত্রেরা থাকবেন। প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষের প্রতিবন্ধী ছাত্রেরাও তাঁদের সহপাঠীদের সঙ্গে থাকবেন। তৃতীয় বর্ষ বা তার থেকে উঁচু শ্রেণির প্রতিবন্ধী ছাত্রদেরও জেপিজে বিল্ডিংয়েই রাখা হবে।

সাধারণ ভাবে তৃতীয় বর্ষের নীচের কাউকে যাদবপুর থানার পাশে মেন হস্টেলে রাখছেন না যাদবপুর কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়েছে, তৃতীয় বর্ষকে মেন হস্টেলের এ ওয়ান ব্লকে এবং চতুর্থ বর্ষকে এ টু ব্লকে রাখা হবে। রাজ্য সরকারের দেওয়া সাড়ে পাঁচ কোটি টাকায় মেন
হস্টেল সংস্কারের কাজও শুরু হচ্ছে। এর জন্য অবশ্য মেন হস্টেলের ছাত্রদের বিন্যাস কয়েক মাস ওলটপালট হতে পারে বলে মনে করছেন যাদবপুর কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন
Advertisement