ফাইল চিত্র।
সঙ্গীতশিল্পী কেকে-র মৃত্যুর পরে সে দিনের অনুষ্ঠানস্থল নজরুল মঞ্চকে ঘিরে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। ৩১ মে, মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রেক্ষাগৃহের বেলাগাম ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় কেএমডিএ-র পাশাপাশি গাফিলতির আঙুল উঠেছে পুলিশের দিকেও।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করতে চলেছে ওই সংস্থা। শীঘ্রই তারা একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর (এসওপি) প্রকাশ করবে। এসওপি তৈরি করা নিয়ে কেএমডিএ-র শীর্ষ আধিকারিকেরা বৈঠকে বসবেন বলে সূত্রের খবর।
ওই সন্ধ্যায় কেকে-র অনুষ্ঠান চলাকালীন যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা ঘিরে পুলিশের দিকেও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। সেগুলি পর পর সাজালে উঠে আসে, কেকে-র মতো জনপ্রিয় শিল্পীর অনুষ্ঠানে পুলিশ কেন সক্রিয় ছিল না? সূত্রের খবর, সে দিন নজরুল মঞ্চে ৩০ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিলেন। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন, বাইরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ বা গোলমাল সামলাতে তাঁরা কেন ব্যবস্থা নেননি? তাঁদের ভূমিকা কী ছিল? প্রয়োজন মনে করে কি বাড়তি বাহিনী চাওয়া হয়েছিল? না চাওয়া হলে, কেন হয়নি?
এ সব প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও উত্তর মেলেনি লালবাজারের থেকে। এক পুলিশকর্তার শুধুই আশ্বাস, এমন বিশৃঙ্খলার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেটি দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তার ফাঁক বন্ধ করতে নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলা হবে। অনুষ্ঠানে দর্শকদের ঢোকার বিষয়টি আয়োজকদের পাশাপাশি যাতে পুলিশ দেখে, সেই বন্দোবস্তও থাকবে।
কেএমডিএ-র আধিকারিকদের মতে, এমন অব্যবস্থা নজরুল মঞ্চে অতীতে হয়নি। তাঁরা জানাচ্ছেন, একাধিক শ্রোতা একটি চেয়ারে দাঁড়িয়ে থাকায় সেগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর পর থেকে কোনও অনুষ্ঠানে ভিড় হওয়ার আগাম আঁচ পেয়ে নিজেদের লোকবল বাড়াতে এবং পুলিশকেও বেশি কাজে লাগাতে চায় কেএমডিএ।
সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘এ বার থেকে নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে গেলে কেএমডিএ-র নির্দেশিকা কঠোর ভাবে মানতে হবে। সে সব বিধিনিষেধ দ্রুত সামনে আনা হবে।’’ নতুন নির্দেশিকা জারি হলে কোনও অনুষ্ঠানের আগে কেএমডিএ-র তরফে উদ্যোক্তাদের আসন সংখ্যার ভিত্তিতে গেট পাস দেওয়া হবে, যাতে তাঁরা তা টিকিটের সঙ্গে দর্শকদের দিতে পারেন। কেএমডিএ-র গেট পাস না থাকলে দর্শককে মূল গেটেই আটকানো হবে। যাতে আসন সংখ্যার বেশি দর্শক না ঢোকেন, তাই এই ব্যবস্থা।
এ দিন লালবাজার জানিয়েছে, শহরের যে কোনও প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠান করতে হলে সেখানের আসন সংখ্যা কত এবং কত পাস দেওয়া হয়েছে সেই তথ্য আয়োজক সংস্থার থেকে নেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে অ্যাম্বুল্যান্স ও চিকিৎসক রাখা থাকবে কি না, তা-ও জানাতে হবে আয়োজকদের। নজরুল মঞ্চের ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যারিকেড ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে নজরদারির বন্দোবস্ত এবং নজরুল মঞ্চে ঢোকা এবং বেরোনোর আলাদা প্রবেশপথের ব্যবস্থাও থাকবে।