The West Bengal National University of Juridical Sciences

উপাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ খারিজ হাই কোর্টে

বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ পূর্বের একক বেঞ্চের নির্দেশকে খারিজ করে দিয়েছেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৪৮
কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার অভিযোগ খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট।

কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার অভিযোগ খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট। —প্রতীকী চিত্র।

রাজ্যের জাতীয় আইনবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্মলকান্তি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ওঠা কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার অভিযোগ খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ পূর্বের একক বেঞ্চের নির্দেশকে খারিজ করে দিয়েছেন। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং লোকাল কমপ্লেন্টস কমিটি বা এলসিসি (স্থানীয় অভিযোগ কমিটি) ওই অভিযোগ খারিজ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা ছিল যথাযথ।

Advertisement

প্রসঙ্গত, বিচারপতি কৌশিক চন্দের একক বেঞ্চ এলসিসি-র রায়কে খারিজ করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন উপাচার্য নির্মলকান্তি চক্রবর্তী।

উপাচার্যের আইনজীবী লক্ষ্মীকুমার গুপ্ত ও শিবশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযোগকারিণী অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে পেশাগত ত্রুটি, অসম্পূর্ণ প্রকল্প এবং প্রকল্প সংক্রান্ত পর্যাপ্ত আর্থিক তথ্য পেশ না করার অভিযোগে অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছিল। এমনকি, একটি বেসরকারি ব্যবসায়িক সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন অধ্যাপিকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগ পরিচালনার ক্ষেত্রে যা যথাযথ নয়। আইনজীবীদের দাবি, আচার্যের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে অধ্যাপিকা কোনও হেনস্থার অভিযোগ করেননি।

অন্য দিকে, অধ্যাপিকার আইনজীবী কল্লোল বসু জানান, এলসিসি উপযুক্ত যাচাই না করেই তাঁর মক্কেলকে হেনস্থার অভিযোগ খারিজ করেছিল। কল্লোলের অভিযোগ, উপাচার্য কর্মক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে অধ্যাপিকাকে হুমকিও দিয়েছেন। যার ফলে অভিযোগকারিণী মানসিক ও শারীরিক ভাবে বিপর্যস্ত হন।

বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘যৌন হেনস্থা প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী, সর্বাধিক সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে অভিযোগ করেছিলেন অধ্যাপিকা। এই দেরির উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারেননি তিনি। উল্লেখ্য, কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা প্রতিরোধ আইন ২০১৩ অনুযায়ী, ঘটনার তিন মাস বা বিশেষ ক্ষেত্রে সর্বাধিক ছ’মাসের মধ্যে অভিযোগ জানাতে হয়। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কমিটি অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে পেশাগত ত্রুটির তদন্ত শুরু করার পরে হেনস্থার অভিযোগ আনা হয়।

বিচারপতিরা জানান, প্রশাসনিক কমিটিতে উপাচার্য ছাড়াও বিশিষ্ট আইনবিদ এবং শিক্ষাবিদেরা রয়েছেন। তাই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে উপাচার্য নিজের ক্ষমতার প্রভাব দেখাতে পারবেন না। সব পক্ষের যুক্তি ও তথ্য বিবেচনা করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ হেনস্থার অভিযোগ খারিজ করে দেয়।

Advertisement
আরও পড়ুন