Gita Path at Brigade

আবার ‘লক্ষ’ কণ্ঠে ব্রিগেডে গীতাপাঠ! উত্তর থেকে মধ্য হয়ে দক্ষিণে নামার প্রস্তুতি শুরু কার্তিক মহারাজদের

লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে লাখো মানুষকে এনে গীতাপাঠের আয়োজন করা হয়েছিল। আবার তেমন উদ্যোগের প্রস্তুতি চলছে। তবে এ বার তিন ভাগে হবে কর্মসূচি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৪ ১২:৪৩
Sanatan Sanskriti Sansad started preparation of Gita recitation at Brigade ground of Kolkata again

কার্তিক মহারাজ। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বিভিন্ন হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন। ২০২৩ সালের সেই উদ্যোগের পরে আবার শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। তবে সংগঠনের যা পরিকল্পনা, তাতে এই ২০২৪ সালে ব্রিগেডে তেমন সমাবেশ হচ্ছে না। হতে হতে ২০২৫ সালের গোড়া।

Advertisement

এখনও দিনক্ষণ ঠিক না হলেও উত্তরবঙ্গে একই রকম কর্মসূচি ঠিক হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে তৈরি ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’ ১ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে বৈঠকে বসছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, শিলিগুড়ির কাছে কোনও বড় মাঠে আগামী ১৪ বা ১৫ ডিসেম্বর হবে প্রথম গীতাপাঠের কর্মসূচিটি। উত্তরবঙ্গের পরে মধ্যবঙ্গের বর্ধমানে বসবে দ্বিতীয় গীতাপাঠের আসর। শেষে ২০২৫ সালের প্রথম দিকেই ব্রিগেড সমাবেশ বলে জানিয়েছেন সংসদের প্রধান তথা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজ (স্বামী প্রদীপ্তানন্দ)। যিনি লোকসভা ভোটের অব্যবহিত আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের মুখে পড়েছিলেন।

২০২৩ সালের ব্রিগেড সমাবেশ আলোচনার সঙ্গে বিতর্কও ডেকে এনেছিল। কার্তিক মহারাজেরা দাবি করেছিলেন, ১ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ গীতাপাঠে সামিল হয়েছিলেন। বিশ্বরেকর্ড গড়ার দাবিও করা হয়। তবে অনেকেই যোগদানকারীর সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ বার তাই অন্য পরিকল্পনা! কার্তিক মহারাজ শনিবার বলেন, ‘‘ব্রিগেডে কত মানুষের সমাবেশ হয়েছিল, তা যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁরাই জানেন। তবে সে বার উত্তরবঙ্গের মানুষ সে ভাবে যোগ দিতে পারেননি। সেই কারণেই এ বার তিন ভাগে হবে গীতাপাঠ। সর্বত্রই বিপুল সংখ্যায় মানুষ আসবেন। আর চূড়ান্ত আয়োজন আবার ব্রিগেডেই হবে।’’ গত বার প্রথমে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রিগেডে হাজির থাকবেন বলে প্রচার হয়েছিল। কিন্তু মোদীর সফর শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যায়। তবে এ বার তেমন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ কেউ।

তবে আপাতত অন্য কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত সনাতন সংস্কৃতি সংসদ। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতেই বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সে দেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জমায়েত এবং মিছিলও হয়েছে। এ বার সেই বিষয়ে কলকাতায় পথে নামতে চান কার্তিক মহারাজেরা। শনিবারই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে স্মারকলিপি দিতে যাবেন তাঁরা। কার্তিক মহারাজ বলেন, ‘‘শুধু হিন্দু নয়, বাংলাদেশে অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও আমরা চিন্তিত। তাই শনিবার বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের সন্ন্যাসীরা রাজভবনের সামনে জমায়েত করবেন। তার পরে প্রতিনিধিদল রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দেবে।’’

তবে হিন্দুত্বের বার্তা দেওয়াই যে কার্তিক মহারাজদের ‘প্রধান উদ্দেশ্য’, তা স্পষ্ট হতে চলেছে চলতি মাসেই। সংসদের পরিকল্পনা আছে আগামী ১৭ অগস্ট কলকাতায় শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ের কাছে একটি সমাবেশ করার। কার্তিক মহারাজ বলেন, ‘‘ওই দিন সমাবেশ নয়, হিন্দু ধর্ম সম্মেলন হবে। রাজ্যের সব প্রধান ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।’’ লোকসভা নির্বাচন পর্বে ‘হিন্দুত্ব’ নিয়ে সরব হয়েছিলেন কার্তিক মহারাজ। তা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের একটি মন্তব্য নিয়ে কার্তিক মহারাজ পাল্টা বলেন। এর পরে একটি নির্বাচনী জনসভায় কার্তিক মহারাজের নাম করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা অভিযোগ করেছিলেন যে, তিনি ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করছেন। পাল্টা কার্তিক মহারাজ মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি চিঠি পাঠান। দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে তাঁর ‘মানহানি’ হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement