মিছিলের দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।
১৪ অগস্ট মধ্যরাতে ‘রাত দখলের’ ডাকে সাড়া দিয়ে পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। এ বার সেই ‘রাত দখল, অধিকার দখল’ আন্দোলনের ডাকে রবিবার দিনের আলোয় নাগরিক মিছিলে পা মেলালেন শহরবাসী।
গত দু’সপ্তাহ ধরেই আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় উত্তাল বাংলা-সহ সারা দেশ। জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদ। প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে অভিনেতা, গায়ক, স্কুল-কলেজের পড়ুয়া এমনকি ফুটবলপ্রেমীরাও। এর মাঝে গত ১৪ অগস্ট মধ্যরাতে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে নারী ও প্রান্তিক লিঙ্গপরিচয়ের মানুষের নিরাপত্তার দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে পথে নেমেছিলেন মেয়েরা। রাত দখলের সেই আন্দোলন কাঁটাতার পেরিয়ে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ, ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াতেও! দেশ-বিদেশের বহু জায়গায় প্রতিবাদে সরব হন মানুষ। কিন্তু আরজি কর-কাণ্ডে বিচার এখনও অধরাই। এর মাঝে রবিবার ফের পথে নামলেন ‘মেয়েদের রাত দখল’ আন্দোলনের সাথীরা।
রবিবার দুপুর তিনটে নাগাদ মিছিল শুরু হয় এন্টালির রামলীলা ময়দান থেকে। মিছিলে ছিলেন আট থেকে আশি- বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এ বার তিন দফা দাবিতে মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। মিছিলে কলকাতা ছাড়াও ছিলেন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার মানুষ। এঁরা প্রত্যেকেই ১৪ তারিখ রাতে নিজের নিজের এলাকায় জমায়েতের ডাক দিয়েছিলেন। তবে রবিবার সকলেরই মূলত তিনটি দাবি ছিল। এক, আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে, সেইসঙ্গে বরখাস্ত করতে হবে রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতিতে জড়িত সকলকেই। দ্বিতীয়ত, এ বার শুধু ‘রাত দখল’ নয়, বরং দিন হোক বা রাত, গণপরিসরে নারী ও প্রান্তিক লিঙ্গের মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে সব সময়ের জন্যই। তৃতীয় দাবি হিসাবে তাঁরা বলেন, নিয়ন্ত্রণ কিংবা নজরদারি নয়, কর্মক্ষেত্রে ও অন্যান্য সামাজিক পরিসরে নারী ও প্রান্তিক লিঙ্গের মানুষের সমমর্যাদা চান তাঁরা। এ ছাড়া, আরজি কর-কাণ্ডে কর্তৃপক্ষের গাফিলতি এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি রাজ্য মহিলা কমিশনের চুপ থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।