Home Stay

তিন বছরে শহরে ন’টি হোম স্টে, প্রশ্নে পরিকল্পনা

তিন বছর পেরিয়ে গেলেও শহরে হোম স্টে তৈরি হয়েছে মাত্র ন’টি। প্রশ্ন উঠেছে, বছর তিনেক আগে সরকারি তরফে ঢোকঢোল পিটিয়ে পরিকল্পনা করা হলেও হোম স্টে-র সংখ্যা বাড়ল না কেন?

Advertisement
মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৩৭
রাজ্য পর্যটন দফতর প্রতিটি জেলায় হোম স্টে গড়ার পরিকল্পনা করেছিল।

রাজ্য পর্যটন দফতর প্রতিটি জেলায় হোম স্টে গড়ার পরিকল্পনা করেছিল। —প্রতীকী চিত্র।

কলকাতায় প্রচুর হোটেল, অতিথিশালা থাকলেও অনেকে বাড়ির পরিবেশ পেতে চান। সেই যুক্তিতেই ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বা অন্য কাজে শহরে আসা অতিথিদের বাড়ির মতো পরিবেশে থাকা-খাওয়ার সুবিধা দিতে হোম স্টে গড়ার পদক্ষেপ করা হয় বছর তিনেক আগে। রাজ্য সরকারের তরফে এর জন্য ‘হোম স্টে টুরিজ়ম পলিসি ২০২১’ তৈরি করা হয়। অথচ, তিন বছর পেরিয়ে গেলেও শহরে হোম স্টে তৈরি হয়েছে মাত্র ন’টি। প্রশ্ন উঠেছে, বছর তিনেক আগে সরকারি তরফে ঢোকঢোল পিটিয়ে পরিকল্পনা করা হলেও হোম স্টে-র সংখ্যা বাড়ল না কেন? কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বুধবার বলেন, ‘‘হোম স্টে তৈরির জন্য পুরসভার কাছে একাধিক আবেদনপত্র জমা পড়লেও পর্যটন দফতরের ঠিক করে দেওয়া নিয়ম-নীতির সঙ্গে না মেলায় বহু আবেদনপত্র বাতিল হয়েছে। পাশাপাশি, কলকাতায় হোম স্টে গড়ার জায়গারও অভাব রয়েছে।’’

Advertisement

পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনায় ২৪টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২২৪টি এবং হাওড়ায় ১৬টি হোম স্টে তৈরি হয়েছে। অথচ, কলকাতায় মাত্র ন’টি হোম স্টে তৈরি হওয়ায় পুরসভায় বিরোধী পুরপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, আগেও দেখা গিয়েছে, কোনও প্রকল্প চালু হওয়ার আগে পুরসভা ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রচার করলেও আদতে বাস্তবায়িত হয় না। কলকাতায় নগণ্য সংখ্যক হোম স্টে তৈরি হওয়া কার্যত তারই প্রমাণ বলে দাবি ওই পুরপ্রতিনিধিদের। বাংলায় পর্যটনের প্রসারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য জুড়ে হোম স্টে তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন বছর তিনেক আগে। সেই মতো তদানীন্তন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সব জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে হোম স্টে-র সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। কলকাতায় হোম স্টে গড়ার লক্ষ্যে পুরভবনে পুরসভার ১৪৪ জন পুরপ্রতিনিধিকে নিয়ে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হোম স্টে তৈরি করতে পুরসভা ও পর্যটন দফতরের আধিকারিকেরা দফায় দফায় বৈঠক করেছিলেন। পর্যটন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার জন্য পুরসভায় নতুন পদও তৈরি করা হয়েছে। পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিককে সেই নোডাল অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ কাজের কাজই হয়নি বলে অভিযোগ।

ভ্রমণ, চিকিৎসা বা অন্য নানা প্রয়োজনে দূর-দূরান্ত থেকে কলকাতায় প্রচুর মানুষ আসেন। আসেন বিদেশিরাও। তাঁদের কথা ভেবেই রাজ্য পর্যটন দফতর প্রতিটি জেলায় হোম স্টে গড়ার পরিকল্পনা করেছিল। নিয়ম অনুযায়ী, যিনি হোম স্টে তৈরি করবেন, তিনি সরকারের তরফে এক লক্ষ টাকা পাবেন। তা সত্ত্বেও কলকাতায় সাড়া মিলছে না কেন? প্রশ্ন উঠেছে, হোম স্টে গড়ে তুলতে নাগরিকদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করার জন্য কলকাতা পুরসভার তরফে যে প্রচার অভিযান চালানো হয়, তা কি যথেষ্ট ছিল না? এ সব প্রশ্নের উত্তরে পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শহরে যে সমস্ত বাড়ি রয়েছে, সেখানে আদর্শ হোম স্টে গড়ার পরিবেশ নেই। অনেকে আবার হোম স্টে তৈরির আবেদন করলেও তাঁদের পরিকাঠামো পর্যটন দফতরের হোম স্টে নীতির সঙ্গে মেলেনি।’’

Advertisement
আরও পড়ুন