R G Kar Hospital Incident

ঘটনার দিন বন্ধ সেমিনার রুমের তালা খুলেছিলেন কে? এই প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে আরজি করের অলিন্দে

জানা যাচ্ছে, সিস্টার ইন-চার্জের কাছে বাক্সে ওই চাবি থাকে। চিকিৎসকেরা সেটি নেওয়ার সময়ে জানিয়ে নেন এবং ফেরত দেওয়ার সময়েও জানিয়ে বাক্সে রেখে দেন।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৪ ১০:০৬
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

ঘটনার দিন বন্ধ সেমিনার রুমের তালা খুলেছিলেন কে? সেই প্রশ্নই বুধবার ঘুরপাক খেল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। কারণ, প্রতিদিনের মতো ওই দিন বিকেলেও চারতলার পালমোনারি মেডিসিন বিভাগের সেমিনার রুম তালাবন্ধ করা হয়েছিল। চাবি রাখা ছিল কর্তব্যরত সিস্টার ইন-চার্জের কাছে। তাঁর থেকে চাবি নিয়ে কে ওই ঘর খুলেছিলেন? উত্তর মেলেনি।

Advertisement

আন্দোলনকারী আবাসিক চিকিৎসকদের দাবি, ‘‘এ রকম অনেক ধোঁয়াশাই স্পষ্ট হওয়ার জন্য আন্দোলন চলবে।’’ ওই সেমিনার রুম থেকেই উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের দেহ। ঘটনার সাত দিনের মাথায় এ দিন সকালে হাসপাতালের পালমোনারি মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অরুণাভ দত্তচৌধুরী জানান, ৮ অগস্ট বিকেল চারটে পর্যন্ত ওই সেমিনার রুমে ক্লাস হয়। তার পরে ঘর বন্ধ করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন বিকেলে ক্লাস শেষের পরে সেমিনার রুম তালাবন্ধ করে চাবি রাখা থাকে ওয়ার্ডের সিস্টার ইন-চার্জের কাছে। তাঁর থেকে কে বা কারা চাবি নিয়েছিলেন, বলতে পারব না।’’ সেমিনার রুমে কি রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা থাকতেন? ‘‘সেটা ঠিক জানা নেই’’, বলে দাবি করলেন ঘটনার আট দিন আগে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নেওয়া অরুণাভ।

জানা যাচ্ছে, সিস্টার ইন-চার্জের কাছে বাক্সে ওই চাবি থাকে। চিকিৎসকেরা সেটি নেওয়ার সময়ে জানিয়ে নেন এবং ফেরত দেওয়ার সময়েও জানিয়ে বাক্সে রেখে দেন। তাই বহিরাগত কারও চাবি নেওয়ার সুযোগ নেই, তা স্পষ্ট নার্সিং সুপার কৃষ্ণা সাহার কথায়। তবে ওই দিন কে চাবি নিয়েছিলেন, তা তিনি জানেন না বলে দাবি কৃষ্ণার। তা হলে ওই দিন বন্ধ সেমিনার রুম কে, কখন খুলেছিলেন?

সূত্রের খবর, ওই সেমিনার রুমের ভিতরে রয়েছে সিস্টারদের স্টোর রুম। তার চাবিও সিস্টার ইন-চার্জের কাছেই থাকে। এ দিন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের এক আধিকারিক হাসপাতালে অধ্যক্ষের কাছে যান। সেখানেই অরুণাভ-সহ ওই তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ইউনিট ইনচার্জ সুমিত রায় তপাদার এবং কৃষ্ণাকে ডেকে পাঠানো হয়। দেখা হয়, ঘটনার দিন পালমোনারি মেডিসিন ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের ডিউটি রেজিস্টার। কারা, কখন, ঘটনার খবর কী ভাবে পেয়েছেন, তা-ও জানতে চান ওই আধিকারিক।

পরে অরুণাভ দাবি করেন, সকাল ১০টা নাগাদ সুমিতের থেকে তিনি ঘটনার কথা জানেন। তাঁর কথায়, ‘‘শুনেই অধ্যক্ষ ও সুপারকে ফোন করি। তাঁরা তত ক্ষণে বিষয়টি জেনে হাসপাতালের পথে। আমিও ঘটনাস্থলে যাই। তত ক্ষণে পুলিশ এসে যাওয়ায় দূর থেকে দেখে শিউরে উঠি।’’ বিভাগীয় প্রধান আরও জানান, এক সহকারী সুপার ওই তরুণীর বাড়ির নম্বর চাইলে সেটি তাঁকে তিনি জোগাড় করে দেন। আত্মহত্যার কথা বাড়িতে কে বলেছিলেন? অরুণাভ বলেন, ‘‘জানি না। আমি বলিনি। দূর থেকে দেহ দেখলেও অস্বাভাবিক মৃত্যুই মনে হয়েছিল।’’ তরুণীর বাবা-মাকে তিনি নিজের ঘরে নিয়ে বসিয়েছিলেন বলেও জানান অরুণাভ। তাঁর দাবি, ‘‘দু’বার সেমিনার রুমের সামনে গিয়েছিলাম। তদন্ত চলায় পুলিশ ঢুকতে দেয়নি। সেটাই তরুণীর বাবা-মাকে জানিয়েছিলাম।’’

কৃষ্ণার দাবি, শুক্রবার সকালের শিফটে আসা সিস্টার ইন-চার্জের থেকে ১০টা নাগাদ খবর পান। তিনি বলেন, ‘‘পৌনে দশটা নাগাদ চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মী ওই সিস্টার ইন-চার্জকে বিষয়টি জানান। শুনে ডেপুটি নার্সিং সুপারকে যেতে বলি।’’ কিন্তু প্রশ্ন জাগল না যে, সেমিনার রুমের চাবি সকালেও কেন ফেরত এল না? এর উত্তরও ধোঁয়াশায় মোড়া।

আরও পড়ুন
Advertisement