যোগসূত্র রয়েছে আধার সেবা কেন্দ্রেরও? —ফাইল চিত্র।
ডাকঘরের পরে ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরির পিছনে কি যোগসূত্র রয়েছে আধার সেবা কেন্দ্রেরও? প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কারণ হিসাবে তাঁরা জানাচ্ছেন, তদন্তে উঠে এসেছে, পাসপোর্টের আবেদনপত্রের সঙ্গে আধার কার্ডের যে ফোটোকপি জমা দেওয়া হয়েছিল, সেই আধার কার্ডগুলি বানানো হয়েছিল গত কয়েক মাসে। কিন্তু যাচাইয়ের সময়ে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট আধার কার্ডে যার নাম রয়েছে, সেই নামে কারও অস্তিত্ব নেই। অথচ, তার ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইউআইডি) মিলে যাচ্ছে জমা দেওয়া আধার কার্ডের ফোটোকপির সঙ্গে। যা থেকে তদন্তকারীদের সন্দেহ, আধার সেবা কেন্দ্রের কর্মীদের একাংশের হাত না থাকলে এই কাজ করা সম্ভব নয়। তবে, সব নথি ও তথ্য হাতে আসার পরেই পুরো বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ভুয়ো পাসপোর্ট-চক্রের সদস্যদের সাহায্য নিয়ে বেআইনি ভাবে কাঁটাতার পেরিয়ে এ দেশে প্রবেশ করতেন ভারতীয় পাসপোর্টের অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশিরা। চক্রের পান্ডা সমরেশ বিশ্বাসকে জেরা করে এ ব্যাপারে কিছু তথ্য মিললেও সে বিভিন্ন সময়ে বিভ্রান্ত করছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, চক্রটি যাঁদের পাসপোর্ট তৈরি করেছিল, তাঁরা সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। ফলে, তাঁরা যে আইনি পথে ভারতে ঢোকেননি, সেটা স্পষ্ট।
এক পুলিশকর্তা জানান, চক্রের সদস্যেরা মূলত প্যাকেজ সিস্টেমে বাংলাদেশি নাগরিকদের এ দেশে নিয়ে এসে ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করত। এর পরে ওই পরিচয়পত্র জমা দিয়ে তৈরি হত পাসপোর্ট, ভিসা ও ব্যাঙ্কের জাল নথি। সেগুলি দিয়ে বিদেশে পাঠানো হত ওই বাংলাদেশিদের।
উল্লেখ্য, ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে রয়েছে সমরেশ ও তার ছেলে রিপন, ডাকঘরের দুই কর্মী তারকনাথ দাস ও দীপক মণ্ডল এবং ভুয়ো নথি তৈরিতে বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর দাস। এদের মধ্যে শুক্রবার পুলিশি হেফাজত শেষে সমরেশ ও দীপককে ফের
আদালতে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি সৌরীন ঘোষাল জানান, এই দু’জনের সরাসরি যোগ রয়েছে চক্রের সঙ্গে। বিচারক তাদের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠান। তবে সমরেশ ও দীপঙ্করের মধ্যে যোগাযোগ রেখে চলা ব্যক্তির খোঁজ এখনও মেলেনি।