আরজি কর প্রসঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ সঙ্গত বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দোষীর ফাঁসির শাস্তি চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবিপি আনন্দকে টেলিফোনে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এই ঘটনায় ফাস্টট্র্যাক আদালতে ফাঁসির আবেদন জানানো উচিত। রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা না থাকলে অন্য কোনও এজেন্সির দ্বারস্থও হতে পারেন আন্দোলনকারীরা। কারণ, সরকার উপযুক্ত তদন্ত চায়।
আরজি করের ঘটনা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকের মৃত্যু ন্যক্কারজনক এবং অমানবিক। আমার মনে হচ্ছে, যেন নিজের পরিবারের কাউকে হারিয়ে ফেলেছি। এই ঘটনাকে কখনওই সমর্থন করা যায় না। জুনিয়র চিকিৎসকেরা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা সঙ্গত বলেই আমি মনে করি। আমি ওদের দাবির সঙ্গে একমত।’’
মমতা বলেন, ‘‘আমি কাল ঝাড়গ্রামে ছিলাম। রাস্তা থেকে খবর নিচ্ছিলাম। মেয়েটির বাবা এবং মায়ের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। আমি আমার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি, দোষীদের চিহ্নিত করে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ফাস্টট্র্যাক আদালতে এই মামলা তুলতে এবং প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন জানাতে। কিন্তু, এই অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই।’’
অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে মমতা আরও বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে ফাঁসির বিরোধী। কিন্তু কিছু কিছু ঘটনায় এই ধরনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন আছে। যাতে আর কেউ ভবিষ্যতে এর সাহস না পায়।’’
এই মামলায় রাজ্য সরকারের পুলিশের প্রতি আস্থা না থাকলে আন্দোলনকারীরা যে কোনও এজেন্সির কাছে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন মমতা। কারণ, সরকারের লক্ষ্য উপযুক্ত তদন্ত। এই ঘটনায় সরকারের কিছু লুকোনোর নেই।
মমতা বলেন, ‘‘যাঁকে ধরা হয়েছে, তাঁর ওখানে যাতায়াত ছিল। যাঁরা হাসপাতালের ভিতরে যাতায়াত করেন, তাঁদের মধ্যেই কেউ এই কাজ করে থাকবেন। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাশে আমি আগেও ছিলাম, এখনও থাকব। ওঁদের সঙ্গে আমি একমত।’’
উল্লেখ্য, শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণ এবং খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে। শনিবার সকাল থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকেরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। মিছিল থেকে স্লোগান উঠছে, ‘বিচার চাই!’ এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভের পক্ষেই কথা বললেন মমতা। সঙ্গে ফাঁসি চাইলেন অভিযুক্তের।