অনশনমঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারেরা। সোমবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার প্রতীকী অনশনের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলের ডাকও দেওয়া হয়েছে। কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ওই মিছিল হবে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ। সাধারণ মানুষকে মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরজি করের ঘটনায় সিবিআইয়ের চার্জশিট প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম থেকে যা তথ্য পেয়েছি, সেই অনুযায়ী এটি একটি প্রাথমিক চার্জশিট। তার ভিত্তিতে এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব। তার পরে এই বিষয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব।”
আরজি করে তরুণী ডাক্তারের ধর্ষণ-খুনের মূল যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের সূত্রপাত, সেই ঘটনায় চার্জশিট গঠন করেছে সিবিআই। শিয়ালদহ আদালতে তা জমা দেওয়া হচ্ছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই জুনিয়র ডাক্তার সোমবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাঁরা হলেন, অলোক কুমার বর্মা এবং শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মতলার মঞ্চ থেকেই সে কথা ঘোষণা করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টা প্রতীকী অনশনে বসবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অনশন করবেন তাঁরা।
রাজ্যের সব মেডিক্য়াল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা মঙ্গলবার প্রতীকী অনশন করবেন। ধর্মতলার মঞ্চ থেকে এমনটাই ঘোষণা করলেন দেবাশিস হালদার।
কয়েক ঘণ্টা অন্তর অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের রক্তচার, রক্তে শর্করার মাত্রা ইত্যাদি পরিমাপ করা হচ্ছে। তার হিসাব মঞ্চেই টাঙানো বোর্ডে লিখে রাখা হচ্ছে।
মঞ্চের বোর্ডে টাঙানো হয়েছে ডাক্তারদের রক্তচাপ, সুগারের মাত্রা। —নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলায় ১৬৩ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মসূচি প্রসঙ্গে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে প্রশ্ন করা হলে সোমবার তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’
ধর্মতলায় রাস্তা আটকে জুনিয়র ডাক্তারেরা আমরণ অনশনে বসেছেন, এই মর্মে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। কলকাতা হাই কোর্ট সেই মামলায় হস্তক্ষেপ করেনি। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম জানান, এই সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। তাই এই বিষয়ে এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করবে না উচ্চ আদালত।
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে জমায়েত। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চ। —নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে মহিলা এবং পুরুষদের জন্য আলাদা বায়ো টয়লেট বসানো হয়েছে। লিখিত অনুমতি মেলেনি পুলিশের কাছ থেকে। বায়ো টয়লেট ব্যবহার করবেন শুধু অনশনকারীরাই।
সোমবার অনশনমঞ্চে বায়ো টয়লেট বসেছে। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার সকালে অনশনমঞ্চে জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি রয়েছেন সিনিয়রেরাও। সাধারণ মানুষও রয়েছেন।
সময়ের হিসাব রাখছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সোমবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলায় অনশন চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে সাধারণ মানুষও। সোমবার ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে বিশ্রাম নিচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের মধ্যে ছ’জন শনিবার রাত থেকে না খেয়ে আছেন। এক জন অনশন করছেন রবিবার রাত থেকে। স্বচ্ছতা বজায়ের জন্য রাখা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে দু’টি বায়ো টয়লেট বসানো হয়েছে। একটি ব্যবহার করছেন মহিলা অনশনকারীরা, অন্যটি ব্যবহার করছেন পুরুষ অনশনকারীরা। তবে এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশের লিখিত অনুমতি মেলেনি। আন্দোলনকারীদের দাবি, রবিবার পুলিশ জানিয়েছিল, গ্রিন জ়োন হওয়ায় সেখানে বায়ো টয়লেট বসানো যাবে না।
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনকে সমর্থন জানাতে সোমবার সিনিয়র ডাক্তারেরাও ধর্মতলায় অনশনে বসলেন। সকালেই অনশনমঞ্চে পৌঁছে গিয়েছেন কয়েক জন সিনিয়র ডাক্তার। তাঁরা ২৪ ঘণ্টা অনশন করবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রথমে যে ছ’জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন শুরু করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে আরজি করের কেউ ছিলেন না। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। আরজি কর হাসপাতালকে ঘিরে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, আমরণ অনশন শুরু হয়েছে, সেখানে সেই হাসপাতালের কেউ কেন অংশগ্রহণ করছেন না? এই প্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিরোধের জল্পনাও উঠে এসেছিল। যদিও আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের মুখে জুনিয়র ডাক্তারেরা অন্য কথাই জানিয়েছিলেন। তাঁরা দাবি করেছিলেন, আরজি করের এই মুহূর্তের পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবং এই সিদ্ধান্ত হয়েছে ঐক্যবদ্ধ ভাবেই। এর পরেই রবিবার রাতে অনশনে যোগ দেন আরজি করের অনিকেত মাহাতো।
ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের বায়ো টয়লেট নিয়ে জট এখনও কাটেনি। বায়ো টয়লেট বসাতে চেয়ে শনিবার রাতেই লালবাজারে ইমেল করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখান থেকে কোনও জবাব আসেনি। অনশন কর্মসূচির অনুমতিও দেয়নি পুলিশ। তা সত্ত্বেও অনশন চলছে। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, অনশনের মাঝে দুর্বল হয়ে পড়লে শৌচাগার ব্যবহার করতে বেশি দূরে যাওয়া সম্ভব হবে না। সেই কারণে অনশনমঞ্চের কাছেই বায়ো টয়লেট প্রয়োজন।
জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চে সিসি ক্যামেরার নজরদারি রয়েছে। ডাক্তারেরা নিজে থেকে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন। যাতে তাঁদের কার্যকলাপ সর্ব ক্ষণ নজরে থাকে। কর্মসূচির স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই ব্যবস্থা।
সোমবার সকালে ধর্মতলার অনশনমঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত।