গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
আরজি কর-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের কি কোনও প্রভাবশালী যোগ ছিল? মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এই প্রশ্নের জবাব পেতে চাইছে পুলিশ। কারণ, তদন্তকারীরা বুঝতে চাইছেন, কিসের জোরে দিনের পর দিন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ‘অবাধ’ প্রবেশাধিকার পেয়ে এসেছেন ওই অভিযুক্ত? এই অনিয়মের নেপথ্যে কি আর কারও ‘দায়’ রয়েছে?
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে খুনের ঘটনায় শনিবারই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই সিভিক ভলান্টিয়ার প্রায়শই আরজি কর হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসতেন। হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা তো বটেই, বিষয়টি জানতেন আরও অনেকেই। তবে কোথা থেকে ওই যুবক এত রোগী পান? কে বা কারা ওই সব রোগীদের চিকিৎসার দায়িত্ব ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে দিতেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন না কেউ। পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে তারা জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের কাছে বিভিন্ন রোগীর চিকিৎসা করানোর সুপারিশ থাকতে। সেই দায়িত্ব পালনেই হাসপাতালে নিয়মিত যাতায়াত করতেন তিনি। ফলে অনেকের সঙ্গেই চেনা-পরিচিতি হয়ে গিয়েছিল তাঁর। যার জন্য হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে তাঁর অবাধ যাতায়াত নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু কার বা কাদের সুপারিশ আসত অভিযুক্ত ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের কাছে? এর নেপথ্যে কি কোনও ‘প্রভাবশালী’ রয়েছেন?
অভিযুক্তের ‘প্রভাবশালী’ যোগের ইঙ্গিত অবশ্য ইতিমধ্যেই পেয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার পুলিশের ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অথচ ওই কমিটিতে কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারের থাকার কথা নয়। কারণ, সাধারণত ওয়েলফেয়ার বা জনকল্যাণের বিষয়টি পুলিশবাহিনীর কর্মীদের দিয়েই দেখাশোনা করানো হয়। সিভিক ভলান্টিয়ার বাহিনীর অধীন হলেও বাহিনীর ‘সদস্য’ নন। শুধু তা-ই নয়, তদন্তে জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়া সত্ত্বেও পুলিশের মোটরবাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করতেন অভিযুক্ত। থাকতেনও সল্টলেকে ৪ নম্বর ব্যাটেলিয়নে। এই সমস্ত তথ্যই অভিযুক্তের ‘প্রভাবশালী’ যোগের তত্ত্বটিকে জোরালো করছিল। এ বার সেই তত্ত্ব আরও জোরালো হল ‘সুপারিশ’ প্রশ্নে। পুলিশ আপাতত সেই সুপারিশকারীদেরই খোঁজে।