মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণের পরে খুন হওয়া মহিলা চিকিৎসকের বাড়িতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাাধ্যায়। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে মমতা বললেন, ‘‘রবিবারের মধ্যে পুলিশ তদন্ত শেষ করতে না পারলে সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হবে।’’
এর আগে আরজি করের ঘটনায় অপরাধীর ফাঁসির শাস্তি চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবারও সেই দাবি জানান তিনি। আগে জানিয়েছিলেন, তাঁর মনে হচ্ছে, তিনি নিজেরই পরিবারের কাউকে হারিয়েছেন। পরে ফোনে কথা বলেছিলেন নিহত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গেও। সোমবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী দেখা করতে যান ওই নিহত মহিলা চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে। দুপুর পৌনে একটা নাগাদ ওই মহিলা চিকিৎসকের বাড়িতে পৌঁছন মমতা। বেরিয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করছে। রবিবারের মধ্যে তদন্ত শেষ না হলে সিবিআইকে তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে।’’ এর পরেই জুড়ে দেন, ‘‘যদিও সিবিআইয়ের সাফল্যের হার খুব কম। এর আগে তাপসী মালিকের হত্যার তদন্তভার তারা নিয়েছিল, নন্দীগ্রামেকাণ্ড, রিজুয়ানুরের মামলাও তাদের হাতে ছিল। এমনকি, রবীন্দ্রনাথের নোবেল পুরস্কার চুরি যাওয়ার মামলাও সিবিআইকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও মামলারই কিনারা হয়নি। তবে এ ক্ষেত্রে মানুষের সন্তুষ্টির জন্য সিবিআইকে তদন্তভার দেব।’’
উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা ছিলেন আরজি করের ওই নিহত মহিলা চিকিৎসক। গত শুক্রবার তাঁকে আরজি কর হাসপাতালের চার তলার সেমিনার হলে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি শোনার পরে মমতা বলেছিলেন, এই ঘটনায় ফাস্টট্র্যাক আদালতে ফাঁসির আবেদন জানানো উচিত। সোমবারও সে কথা জানান মমতা। মমতা এর আগে জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের তদন্ত সংস্থায় ভরসা না থাকলে অন্য কোনও এজেন্সির তদন্তেও তাঁর আপত্তি নেই। কারণ, সরকার চায় ওই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হোক। সোমবার পুলিশকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিলেন মমতা।
চিকিৎসকের মৃত্যুকে ‘ন্যক্কারজনক এবং অমানবিক’ বলে মন্তব্য করে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাশেও দাঁড়িয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, ‘‘জুনিয়র চিকিৎসকেরা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তা সঙ্গত বলেই আমি মনে করি। আমি ওঁদের দাবির সঙ্গে একমত। আমি প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি, দোষীদের চিহ্নিত করে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ফাস্টট্র্যাক আদালতে এই মামলা তুলতে এবং প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন জানাতে। কিন্তু এই অপরাধের কোনও ক্ষমা নেই।’’
আরজি করের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে অভিযুক্তকে। শুরু হয়েছে তদন্তও। হাসপাতালের পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।