কলকাতা পুরসভা এলাকায় রাস্তার পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হল। এ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করল পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
শুক্রবার ‘গুড ফ্রাইডে’র ছুটি। তবে পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে চলা বিতর্ক প্রশমনে ছুটির দিনেই নতুন নির্দেশিকা দিল কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার রাতেই বর্ধিত পার্কিং ফি প্রত্যাহারের নির্দেশিকা জারি হয়েছে। রাত ৯টা নাগাদ পুরসভার তরফে জারি করা ওই নির্দেশিকায় বলা হয় পরবর্তী নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত পুরনো পার্কিং ফি-ই বহাল থাকবে।
গত ১ এপ্রিল থেকে কলকাতা পুর এলাকায় মোটরসাইকেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন গাড়ির পার্কিং ফি বাড়ায় কলকাতা পুরসভা। এই মর্মে নির্দেশিকার পরে শুরু হয় বিতর্ক। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই ফি বৃদ্ধির বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। সেটি ফিরহাদ নিজেও ঘনিষ্ঠদের বলেছেন। মেয়রের ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, পুরসভা এলাকার ফি বাড়ানোর মতো ছোটখাটো বিষয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তাঁকে বিব্রত করা উচিত নয়। তা ছাড়া ফিরহাদ কলকাতার মেয়র হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের পুর এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রীও বটে। ফলে তিনি পুরসভা সংক্রান্ত এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ব্যতিরেকেই মেয়র ফিরহাদ পুরসভা এলাকায় রাস্তার পার্কিং ফি বৃদ্ধি করেছেন বলে জানান তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
বিষয়টি নিয়ে শাসকদলের অন্দরে চাপান-উতোর শুরু হতেই শুক্রবার ফিরহাদ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বললে পার্কিং ফি বাড়ানোর নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেব। তবে এটা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে প্রকাশ্যে না বলে দলের ভিতরে বললেও হত!’’ অন্য দিকে, দলের মুখপাত্র কুণাল সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অগোচরে’ পার্কিং ফি বাড়ানো হয়েছিল। তিনি কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন ওই বর্ধিত ফি প্রত্যাহার করে পুরনো হারেই পার্কিং ফি নিতে। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী নাগরিকদের উপর ‘বাড়তি বোঝা’ চাপাতে চান না। সেটা তৃণমূলের নীতি নয়। কুণাল আরও দাবি করেন, শুক্রবারের মধ্যেই ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
তার পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুরসভা এলাকায় রাস্তার পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে, এই মর্মে টুইট করে তৃণমূল। তাতে লেখা হয় ‘‘কলকাতায় পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য কলকাতা পুরসভাকে ধন্যবাদ জানাই। এই কঠিন সময়ে রাজ্য সরকার বা কলকাতা পুরসভা মানুষের উপর বাড়তি বোঝা চাপাতে চায় না। মানুষের পক্ষে আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে। আপনাদের মঙ্গল এবং কল্যাণই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার!’’ তার পর প্রকাশ্যে এল কলকাতা পুরসভার এই নির্দেশিকা।