Kolkata Metro

মেট্রো চলাচল মসৃণ করতে দক্ষিণেশ্বরে আরও ৯০ মিটার জমি চেয়ে আবেদন

দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে ঢোকার সময়ে যে কোনও আপ ট্রেনকে ডাউন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে অনেক বেশি সময় লাগে। লাইন বদলের সময়ে ট্রেনের গতি কমাতে হয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৫
ক্রসওভার না থাকায় দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে আপ এবং ডাউন ট্রেন একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।

ক্রসওভার না থাকায় দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে আপ এবং ডাউন ট্রেন একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। —ফাইল চিত্র।

পরিষেবা সম্প্রসারিত হলেও বিশেষ সমস্যার কারণে পরিকাঠামোর অর্ধেক অব্যবহৃত রয়েছে দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে। যেমন, ওই প্রান্তিক স্টেশনের পিছন দিকে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় যাত্রা শেষে ট্রেন ঘোরানোর জন্য ক্রসওভার নেই। ইংরেজি ‘এক্স’ আকৃতির ওই ক্রসওভার না থাকায় ওই স্টেশনে আপ এবং ডাউন ট্রেন একই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। ফলে ওই স্টেশন নিয়ে কর্তৃপক্ষকে একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সমস্যা মিটিয়ে ট্রেন চলাচল মসৃণ করতে স্টেশনের পিছনে (উত্তরে) ৯০ মিটার অংশে লাইনের দৈর্ঘ্য বাড়াতে চায় মেট্রো।

Advertisement

দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে ঢোকার সময়ে যে কোনও আপ ট্রেনকে ডাউন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে অনেক বেশি সময় লাগে। লাইন বদলের সময়ে ট্রেনের গতি কমাতে হয়। এ ছাড়াও ডাউন প্ল্যাটফর্ম খালি না থাকলে বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। ট্রেন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই আপ ট্রেন ঢোকার অনুমতি পায়। এই সব কারণেই কবি সুভাষ থেকে যত মেট্রো ছাড়ে, তার সবগুলিকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায় না। যার প্রভাব পড়েছে দৈনিক মেট্রোর সংখ্যায়। দমদম পর্যন্ত আগে যেখানে দিনে ৩০০টি ট্রেন চালানো যেত, এখন সেখানে দমদম এবং দক্ষিণেশ্বর মিলে সর্বোচ্চ ২৮৮টি ট্রেন চলে। যার প্রায় অর্ধেক দমদমেই যাত্রা সম্পূর্ণ করে।

ক্রসওভার তৈরির জন্য এই পরিসর কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনের পিছনে মন্দিরে যাওয়ার স্কাইওয়াক। এখন ওই সমস্যা মিটিয়ে ট্রেন চলাচল মসৃণ করতে স্টেশনের পিছনে ৯০ মিটার অংশে লাইনের দৈর্ঘ্য বাড়াতে চাইছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। যা পেলে আদর্শ ক্রসওভার তৈরি করা যাবে। সেই জমি পেতেই মাসতিনেক আগে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরি করে রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

এ কাজের জন্য স্কাইওয়াকের একাংশ সরাতে হবে। সেই খরচ এবং নতুন করে রাস্তা তৈরির ব্যয় মেট্রো কর্তৃপক্ষ বহন করবেন বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার ওই খবর জানান, কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার পি উদয় কুমার রেড্ডি। যদিও, রাজ্য প্রশাসন কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি। তবে প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, নগরোন্নয়ন দফতর স্কাইওয়াকের অংশ সরানোয় আগ্রহী নয়। ফলে, কী ভাবে ওই জট কাটবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। অবশ্য রাজ্যের সাহায্য পাওয়া নিয়ে আশাবাদী মেট্রো।

পাশাপাশি এ দিন মেট্রোর জিএম আরও জানান, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত অংশে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ট্রেন চালানো এবং তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র মিলেছে। দীর্ঘদিন ধরে ইথার তরঙ্গ নির্ভর ট্রেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছিল। ফলাফল খতিয়ে দেখে মেট্রোর দায়িত্বপ্রাপ্ত রেলওয়ে সেফটি কমিশনার জনককুমার গর্গ গত সপ্তাহে ছাড়পত্র দেন। এর ফলে ট্রেন চালাতে চালকের ভূমিকা অনেকটা গৌণ হবে।

অতীতে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিনডোরের (পিএসডি) সঙ্গে মিলিয়ে ট্রেন থামাতে গিয়ে চালকদের বিশেষ সতর্ক থাকতে হত। ট্রেনের ১৪০ সেন্টিমিটার চওড়া গেট এবং পিএসডি-র দু’মিটার চওড়া গেটের মধ্যে মাত্র ৬০ সেন্টিমিটার ব্যবধান থাকায় ওই সীমার মধ্যেই এগোনো-পিছোনোর সুযোগ মিলত। কোনও চালক কয়েক মিটার এগিয়ে গেলে তাঁকে অটোম্যাটিক ট্রেন প্রোটেকশন ওয়ার্নিং সিস্টেম সচল করে ধীর গতিতে পিছিয়ে ঠিক জায়গায় দাঁড়াতে হত। নতুন ব্যবস্থায় আগের চেয়ে কম সময়ের ব্যবধানে ট্রেন চালানো যাবে। তবে, বেশি সংখ্যক ট্রেন চালালে চালকের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।

জিএম জানান, ইস্ট-ওয়েস্টে পিএসডি বসলেও শহরের অন্য মেট্রোয় সেই পরিকল্পনা নেই। ফলে, সেখানে এখনই প্ল্যাটফর্মে কাচের দেয়াল বসানো হবে না।

Advertisement
আরও পড়ুন