মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্ পুজোর প্রস্তুতি বৈঠকে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের প্রশ্নের মুখে পড়ল কলকাতা পুলিশ। সোমবার কলকাতা পুরসভায় আসন্ন শারদোৎসব নিয়ে বৈঠক বসে। সেই বৈঠক শেষে মেয়রের গলাতে পুলিশের বিরুদ্ধে শোনা গিয়েছে ক্ষোভের সুর।
সোমবার প্রাক্ পুজোর বৈঠকে কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের পাশাপাশি ছিলেন কলকাতা পুলিশ, সিইএসসি-সহ একাধিক সরকারি দফতরের আধিকারিকেরা। পুরসভা সূত্রে খবর, মেয়র লালবাজারের পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন, পুজোর আগেই দ্রুত বিকল সিসি ক্যামেরাগুলি মেরামত করে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে। পুজোর দিনগুলিতে যাতে নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক থাকে তার জন্য কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সদা সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘শহরের সিসি ক্যামেরাগুলির অধিকাংশই বিকল। কলকাতা পুলিশ বা লালবাজার কোনও রক্ষণাবেক্ষণ করে না। কলকাতার বুকে একাধিক রাস্তা থেকে চুরি যাচ্ছে ম্যানহোলের ঢাকনা। চুরির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। কলকাতা পুরসভার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাচ্ছে সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য। কিন্তু সেগুলি আদৌ কাজ করছে না, নাকি বসানোর পর বিকল হয়ে যাচ্ছে? কোনও রক্ষণাবেক্ষণ করছে না কলকাতা পুলিশ।’’ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলেও স্পষ্ট অভিযোগ করেছেন মেয়র।
ফিরহাদ ক্ষোভের সুরে বলেন, ‘‘কলকাতার বুক থেকে একের পর এক রাস্তা থেকে ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি হয়ে যাচ্ছে। মরণফাঁদ তৈরি হচ্ছে। পুলিশ কী করছে? কেন ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাগুলির ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে না?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘একের পর এক লোহার রেলিং চুরি হয়ে যাচ্ছে।’’ সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র জানিয়েছেন, বর্তমানে কলকাতা পুরসভায় আর্থিক দুরবস্থা চলছে। তাই চুরি হয়ে যাওয়া রেলিং বা ম্যানহোলের ঢাকনা বসানো সম্ভব হচ্ছে না।
এই প্রথম নয়, অতীতেও মেয়র হিসেবে কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ফিরহাদ। সম্প্রতি পুরসভার নিকাশি বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে পুর আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে জল জমে থাকার অভিযোগ পেয়ে নিকাশি বিভাগের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন ফিরহাদ। সেই ঘটনার এক সপ্তাহ কাটতে না-কাটতেই কলকাতা পুলিশের কাজকর্ম নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন মেয়র।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরিবেশকে নষ্ট করে কোনও ভাবেই মণ্ডপ তৈরি করা যাবে না। কোনও গাছের সঙ্গে বেঁধে মণ্ডপ তৈরি করা বা অন্যান্য কাঠামো তৈরি করা যাবে না। মেয়র বলেছেন, ‘‘গাছের সঙ্গে বেঁধে বিজ্ঞাপনের কাঠামো তৈরি করা বা মণ্ডপ তৈরি করা হলে, সেগুলি কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা ভেঙে দেবেন।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘এ ভাবে শহরে বহু গাছ নষ্ট হয়। আমপানের পর কলকাতায় গাছের সংখ্যা কমে গিয়েছে। তাই গাছ নষ্ট করা যাবে না।’’