গাফিলতি কাদের জন্য হয়েছে, তা চিহ্নিত করতে চাইছেন লালবাজারের তদন্তকারীরা। — প্রতীকী চিত্র।
ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের তদন্তে নেমে সরকারি স্তরে একাধিক গফিলতি নজরে এসেছে তদন্তকারীদের। বিশেষ করে একাধিক পর্যায়ে পাসপোর্টের জন্য যে তথ্য যাচাই (ভেরিফিকেশন) হওয়ার কথা, তাতে সবচেয়ে বেশি গাফিলতি হয়েছে বলে উঠে এসেছে তদন্তে। সেই গাফিলতি কাদের জন্য হয়েছে, তা চিহ্নিত করতে চাইছেন লালবাজারের তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে ঠিক কতগুলি ভুয়ো পাসপোর্ট নির্দিষ্ট ডাকঘরগুলিতে আবেদন করার পরে তৈরি (ইসু) হয়েছে, তা-ও জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এ জন্য সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, ওই সব ভুয়ো পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্বে কারা ছিল।
এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘পাসপোর্ট তৈরির আগে আবেদন করা থেকে শেষ পর্যন্ত একাধিক স্তরে পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মীদের তথ্য যাচাই করার কথা। সেটি কেন হয়নি বা ওই তথ্য যাচাইয়ের পর্বে কারা জড়িত রয়েছেন, তা জানাই এখন তদন্তের মূল লক্ষ্য।’’ তবে পুলিশ স্বীকার করে নিয়েছে, তথ্য যাচাই যথাযথ হয়নি বলেই বাংলাদেশের নাগরিকদের নামে এত ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি হয়েছে।
ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে কলকাতা পুলিশের সিট এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন বারাসতের বাসিন্দা সমরেশ বিশ্বাস এবং তাঁর ছেলে রিপন বিশ্বাস। এ ছাড়া ডাকঘরের দুই কর্মী তারকনাথ দাস এবং দীপক মণ্ডল। গ্রেফতার করা হয়েছে ভুয়ো নথি তৈরির কাজে বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর দাসকে। তবে শনিবার পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি হরিদেবপুরের বাসিন্দা এক যুবকের। যাঁর বাড়ি থেকে ভুয়ো নথি তৈরির প্রচুর সরঞ্জাম উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ে পুলিশের তরফে বড় ভূমিকা পালন করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তা কী ভাবে হয়েছিল, সেটিও তদন্তের অধীনে আনা হয়েছে। একই সঙ্গে, নির্দিষ্ট কয়েকটি ডাকঘর এবং পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র থেকে কতগুলি পাসপোর্ট গত কয়েক মাসে তৈরি হয়েছে, তার সব তথ্য এবং নথি পরীক্ষা হচ্ছে।