(বাঁ দিকে) সঞ্জয় বশিষ্ঠ এবং বুলবুল মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে সরানোর নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর। এত দিন এই দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক সঞ্জয় বশিষ্ঠ। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হল হাসপাতালের ডিন বুলবুল মুখোপাধ্যায়কে। শুক্রবার হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধারের পর থেকেই সুপারকে সরানোর দাবি উঠেছিল। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর স্বাস্থ্য দফতর সুপারকে অপসারণের নির্দেশ জারি করল।
শুক্রবার সকালে আরজি করের চার তলায় সেমিনার হলে এক মহিলা চিকিৎসকের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। দোষীদের কঠোরতম শাস্তির দাবিতে সরব হন ওই হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। পরে যোগ দেন অন্যরাও। এই ঘটনায় হাসপাতালে সুপারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারী সূত্রে দাবি, তিনিই শুক্রবার ভোরে সেমিনার হলে গিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। হাসপাতাল চত্বরে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার কী ভাবে ঢুকলেন, সকলের চোখের আড়ালে চার তলায় উঠে এমন কাজ করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি, হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও প্রশ্নের মুখে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই সুপারকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন।
রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আরজি করের সুপারকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন হাসপাতালের বর্তমান ডিন বুলবুল। শুক্রবারের ঘটনার পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটির সদস্যও বুলবুল। সঞ্জয়কে সরিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে অধ্যাপক হিসাবে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরেই কি সুপারকে সরিয়ে দেওয়া হল? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, কর্তৃপক্ষ মনে করেছেন, সবাইকে সুযোগ দেওয়া উচিত। উনি (বুলবুল মুখোপাধ্যায়) হয়তো আরও ভাল কাজ করবেন।
অন্য দিকে, আরজি কর হাসপাতালের সমস্ত চিকিৎসক এবং অচিকিৎসক কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে উদ্ভূত সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। একটি নোটিস জারি করে আরজি কর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অবিলম্বে ছুটি বাতিলের এই নির্দেশ কার্যকর হবে। তবে আগে থেকে যাঁদের ছুটি অনুমোদিত হয়ে গিয়েছিল, তাঁদের আপাতত ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দিতে হবে না।