কালীঘাট মেট্রোর চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসানো হয়েছে গার্ড রেল। গোটা প্ল্যাটফর্ম জুড়েই বসানো হয়েছে আপ এবং ডাউন লাইন বরাবর। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন থামলে যেখানে মেট্রোর দরজা পড়ে, সেই অংশটুকুও ফাঁকা রেখে ওই গার্ড রেল বসানো হয়েছে। যাত্রীদের একাংশ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, সম্প্রতি যে ভাবে মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা বেড়েছে, তা রুখতে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও অন্য একটা অংশের যাত্রীদের অভিযোগ, গার্ড রেল বসানোর পরে কোনও মেট্রোর রেক যদি একটু এগিয়ে বা পিছিয়ে দাঁড়ায়, তা হলে ওঠানামার ক্ষেত্রে খুবই সমস্যা হচ্ছে। যদিও মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গত কয়েক মাসে মেট্রোয় একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বুধবারই চাঁদনি চকে মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দিয়েছেন স্কুলফেরত এক শিশুর মা। তড়িঘড়ি ট্রেন থামালেও শেষরক্ষা হয়নি। দেহ উদ্ধার শেষ না হওয়া পর্যন্ত টানেলেই আটকে ছিল ট্রেনটি। যাত্রীদের ওই অবস্থাতেই নামিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে দীর্ঘ ক্ষণ বন্ধ ছিল পরিষেবা। গত সপ্তাহে কালীঘাটে আত্মঘাতী হয়েছিলেন অন্য এক যাত্রী। সেই আবহেই এ বার সারি সারি গার্ড রেল বসানো হল কালীঘাট মেট্রো প্ল্যাটফর্মে। নিত্যযাত্রীরা জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগেই ওই প্ল্যাটফর্মের ধার বরাবর বসানো হয়েছে গার্ড রেল। প্রতিটি গার্ড রেলের মাঝে কিছুটা জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে। ট্রেন এসে থামলে গার্ড রেলের ওই ফাঁকা অংশ পেরিয়েই মেট্রোয় ওঠানামা করতে হচ্ছে যাত্রীদের। কিন্তু সেখানেই নতুন বিপত্তি। যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, কোনও সময় মেট্রো সামান্য এগিয়ে থামলে গার্ড রেলে আড়াল হয়ে যাচ্ছে মেট্রোর দরজা। ফলে মেট্রোয় চড়তে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে যাত্রীদের।
যাত্রীদের একাংশের প্রশ্ন, গ্রিন লাইন (সল্টলেক-শিয়ালদহ এবং হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড রুট)-এর মতো ব্লু লাইন (দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ রুট)-এও কেন স্বয়ংক্রিয় ‘স্ক্রিন’ দরজা বসানো হচ্ছে না? মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্লু লাইনে স্বয়ংক্রিয় দরজা চালু করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। কারণ, ওই লাইন তুলনায় পুরনো। ফলে আধুনিক দরজা বসানোর মতো প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো নেই ব্লু লাইনে। আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা রুখতে প্রতি স্টেশনেই ‘পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম’-এ ঘোষণা করা হয়, যাত্রীরা যাতে ট্রেন প্রবেশ না করা পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মের ধার ঘেঁষা হলুদ লাইন অতিক্রম না করেন। কোনও যাত্রীকে প্ল্যাটফর্মের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে সরে আসতে বলেন কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মী। সেই আবহেই এ বার বসল গার্ড রেল।
যদিও এ বিষয়ে মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে এখনও আমি কিছু জানি না। জেনে নিয়ে জানাব।’’