CV Ananda Bose

বিনীত সম্পর্কে অবস্থান কী? আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতের অভিযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উত্তর চাইলেন রাজ্যপাল

আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দিয়েছে রাজ্য। সোমবার প্রিজ়ন ভ্যান থেকে চিৎকার করে তাঁর বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:১৬
CV Ananda Bose

(বাঁ দিক থেকে) কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযুক্তের ওই অভিযোগকে মোটেই লঘু করে দেখছে না রাজভবন। ওই অভিযোগের পর আইপিএস অফিসার গোয়েল সম্পর্কে রাজ্যের অবস্থান কী, তা জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার রাজভবন থেকে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, গোয়েল সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রতিক্রিয়া চেয়েছেন রাজ্যপাল বোস। যার প্রেক্ষিতে মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, রাজ্যপাল ‘কেন্দ্রের পাঠানো এজেন্ট’ হয়ে কাজ করছেন। তিনি রাজ্যের রাজ্যপাল হয়ে উঠতে পারেননি।

Advertisement

রাজভবনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১২ নভেম্বর (মঙ্গলবার) আরজি করের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি খবর বেশ গুরুতর। প্রতিবেদনগুলিতে বলা হচ্ছে, আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার গত ১১ নভেম্বর (সোমবার) শিয়ালদহ আদালতে হাজিরার সময়ে দাবি করেছেন, কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ বেশ কয়েক জন উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তা তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আবেদন করছে রাজভবন। তা ছাড়া গোয়েলকে নিয়ে রাজ্যের প্রকৃত অবস্থান কী এবং রাজ্য সরকার ওই অভিযোগ নিয়ে কী ভাবছে, তা শীঘ্রই জানতে চান রাজ্যপাল।

বস্তুত, আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে গোয়েলকে সরিয়ে দেয় রাজ্য। সোমবার বিচারের দ্বিতীয় দিন নিম্ন আদালত থেকে বেরোনোর সময় প্রিজ়ন ভ্যান থেকে চিৎকার করে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আরজি কর-কাণ্ডে একমাত্র অভিযুক্ত। প্রিজ়ন ভ্যান চলতে শুরু করলে জানলা থেকে চিৎকার করে ধৃত সিভিক বলতে থাকেন, “আমি নাম বলে দিচ্ছি…বড় বড় অফিসার রয়েছে…বিনীত গোয়েল, ডিসি স্পেশাল চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে আমায়।” তার আগেও অভিযুক্ত দাবি করেছেন যে, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। গত ৪ নভেম্বর আদালত চত্বরে ধৃত দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। সে বারও প্রিজ়ন ভ্যানের জানলা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি এত দিন চুপচাপ ছিলাম। আমি কিন্তু রেপ (ধর্ষণ) অ্যান্ড (এবং) মার্ডার (খুন) করিনি। আমার কথা শুনছে না। সরকারই আমাকে ফাঁসাচ্ছে।”

অন্য দিকে, রাজ্যপালের বিবৃতির সমালোচনা করেছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘আসলে উনি কখনও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়ে উঠতে পারেননি। উনি কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো এজেন্ট হয়েই থেকেছেন। যাঁর কাজ শুধুই সর্বদা রাজ্য সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করা।’’ শোভনদেবের সংযোজন, ‘‘রাজ্যপালের পদে বসে এমন কাজ একেবারেই শোভনীয় নয় বলে আমি মনে করি।’’

অন্য দিকে, এর আগেও গোয়েলকে নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করার অভিযোগ করা হয় কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার গোয়েল এবং ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গুজব ছড়ানো এবং সেই গুজবে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করেছেন দুই আইপিএস অফিসার।

আরও পড়ুন
Advertisement