গিয়াসউদ্দিন ঠিক কে? ফাইল ছবি।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিগ্রহকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য। অনেকেই অভিযোগ করছেন, এটি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল এবং পূর্বপরিকল্পিত ভাবে নিগ্রহের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। অভিযুক্ত গিয়াসুদ্দিন আলিয়ার প্রাক্তন ছাত্রনেতা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের আগে গিয়াসুদ্দিন যুক্ত ছিলেন তৃণমূলের সঙ্গে। গ্রেফতার হওয়ার আগে গিয়াসুদ্দিন জানিয়েছিলেন তিনি এখনও তৃণমূল দলেরই সমর্থক। তবে গিয়াসউদ্দিন এখন বিজেপি ঘনিষ্ঠ কবিরুল ইসলামের সঙ্গে বিজেপি সমর্থক বলে মনে করছেন আলিয়ার ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদিল আলম।
উপাচার্যকে নিগ্রহের ভিডিয়ো সামনে আসতেই রবিবার গিয়াসুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এই প্রথম নয়। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঝামেলায় নাম জড়িয়েছে গিয়াসুদ্দিনের। গ্রেফতার হয়েছিলেন আগেও। সেই সময় ১০দিন দমদম সেন্ট্রাল জেলে থাকতে হয়েছিল বলে জানান গিয়াসউদ্দিন।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাজিদুর রহমান জানান, ২০১৭-১৮ সালে গিয়াসুদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্যান্টিনের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। সেই সময় পিএইচডি গবেষকরা প্রতিবাদ করলে তাঁদের গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে মারতে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। মারপিটেও নাম জড়িয়েছিল গিয়াসুদ্দিনের।
যদিও গিয়াসুদ্দিনের দাবি, তিনি রাজনীতির শিকার, তাঁর কেরিয়ার শেষ করে দেওয়া হয়েছে। কী হয়েছিল সেই সময় যে গিয়াসুদ্দিনকে সংশোধনাগারে যেতে হয়েছিল? গিয়াসউদ্দিন শনিবার রাতে বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় আমার সঙ্গে বড় রাজনীতি করেছে। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের মধ্যে ঝামেলা লাগিয়ে দেয়। আর তাতে জড়িয়ে পড়ি আমি।’’
তৎকালীন উপাচার্যের ‘স্বজনপোষণ’-এর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দেলন শুরু হয়, তা থামাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে দাবি করেন গিয়াসুদ্দিন। ‘‘
তৎকালীন উপাচার্য ন’জনের নামে সুপরিকল্পিত ভাবে পুলিশে অভিযোগ করেন। পুলিশ তাঁদের গ্রেফতারও করে। কিন্তু উপাচার্যের তালিকায় থাকা তিন জন এবং তালিকার নাম না থাকা আরও ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়। দমদম সংশোধনাগারে পাঠানো হয় ধৃতদের। তাদের মধ্যে আমিও একজন।’’ বলেন গিয়াসুদ্দিন।
গিয়াসুদ্দিন ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি পদে ছিলেন বলে জানান। ২০১৩ ব্যাচের ছাত্র গিয়াসউদ্দিনের আরও দাবি, উপাচার্য তাঁকে ইচ্ছাকৃত ভাবেই পরীক্ষায় বসতে দেননি। তাঁকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল। দীর্ঘ অনশনের পর সেই নির্দেশ তুলে নেওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে বহিষ্কার হওয়া বাকি ছাত্রদের পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হলেও তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘আমার কোনও সাপ্লিমেন্টারি ছিল না। রেজাল্ট তোলা হয়নি। আমাকে বলা হয় আমার সাপ্লি রয়েছে।’’