বিধাননগর পুরসভার গুদামে এ ভাবেই পড়ে রয়েছে আবর্জনা সংগ্রহের পরিত্যক্ত পাত্র। —নিজস্ব চিত্র।
দু’সপ্তাহে বিধাননগরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন আশি জন। গত জানুয়ারি থেকে ধরলে পুর এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৮ বলে দাবি করছেন বিধাননগর পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁরা স্বীকার করে নিয়েছেন, ডেঙ্গির সংক্রমণ এ বার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পালা। এমন পরিস্থিতিতে দেখা গেল, পুরসভার সদর দফতরের উল্টো দিকেই জঞ্জাল সাফাই বিভাগের জিনিসপত্র রাখার জায়গায় (স্ট্যাক ইয়ার্ড) মশার আঁতুড়ঘরের পরিবেশ।
সল্টলেকের এফডি ব্লকে বিধাননগর পুরসভার সদর দফতর। তার উল্টো দিকেই রয়েছে এই জিনিস রাখার জায়গা। সেখানে ঢুকে দেখা গেল, আবর্জনা তোলার বড় বড় কন্টেনার উপর-নীচে জড়ো করে রাখা। সেগুলির গায়ে বড় বড় ফুটো। ভাঙাচোরা সেই সব কন্টেনারের ভিতরে বৃষ্টির জল জমে থাকে। বাতিল টায়ার-সহ জল জমে থাকার মতো নানা সরঞ্জাম স্তূপ হয়ে পড়ে। এক কর্মী জানালেন, নিলামের সময়ে ওই সব সরঞ্জাম সরানো হয়।
গত বছর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে বিধাননগর পুর এলাকায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এক শিশু ও এক তরুণীও ছিলেন মৃতের তালিকায়। চলতি বছরে ডেঙ্গির মোকাবিলায় কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করেছে বিধাননগর পুরসভা। আবাসিকদের বার্তা পাঠানো হচ্ছে, যাতে নিজেদের বাড়ি ও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা হয়। সেখানে পুরসভার জায়গাতেই দেখা গেল, ডেঙ্গিবাহী মশার আঁতুড়ঘরের পরিস্থিতি। ওই জায়গার উল্টো দিকেই আবাসিক এলাকা।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবরাজ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে। যে কোনও জায়গায় আবর্জনা জমে থাকার খবর এলেই ওই দলের সদস্যেরা সেখানে পৌঁছে পরিষ্কার করে দিচ্ছেন। স্ট্যাক ইয়ার্ডের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সল্টলেকের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরে দেখা গেল, বাসিন্দাদের অনেকে যেমন সচেতন নন, তেমনই পুরকর্মীরাও আবর্জনা তোলার সময়ে খেয়াল করেন না, ভ্যাট সম্পূর্ণ পরিষ্কার হল কি না। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের কাছে কেসি ব্লকের উল্টো দিকের ভ্যাটের পাশে কাগজ, প্লাস্টিকের কাপ, বাতিল কমোড, থার্মোকলের বাক্স পড়ে থাকতে দেখা গেল। ইস্টার্ন ড্রেনেজ খালের কাছে আগাছার জঙ্গলে দেখা গেল, প্লাস্টিকের ভাঙা বোতল, কাপ-সহ অনেক কিছু। মেয়র পারিষদের যুক্তি, ‘‘দিনের বিভিন্ন সময়ে কাগজ কুড়নোর লোকেরা ওই সব নিয়ে যান। ফলে ভ্যাটের আশপাশে সারা দিন ও সব পড়ে থাকে না।’’