Bidhannagar Municipality

কার্যবিবরণীর অংশ বাদ কেন, বিধাননগরে ক্ষোভ পুরপ্রতিনিধিদের

পেশ করা বক্তব্য (প্যারা) কার্যবিবরণী থেকে বাদ পড়েছে। যা নিয়ে বিধাননগর পুরসভার বোর্ডের বৈঠকের আগে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে পুরপ্রতিনিধিদের মধ্যে। অনেকেই বিষয়টি আইন-বিরুদ্ধ বলে দাবি করেছেন।

Advertisement
প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০২
বিধাননগর পুরসভা।

বিধাননগর পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

পেশ করা বক্তব্য (প্যারা) কার্যবিবরণী থেকে বাদ পড়েছে। যা নিয়ে বিধাননগর পুরসভার বোর্ডের বৈঠকের আগে তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে পুরপ্রতিনিধিদের মধ্যে। অনেকেই বিষয়টি আইন-বিরুদ্ধ বলে দাবি করেছেন। আজ, বুধবার বোর্ডের বৈঠক হওয়ার কথা।

Advertisement

গত জুলাইয়ে বোর্ডের শেষ বৈঠকে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি প্রসেনজিৎ নাগ তোপ দেগেছিলেন পুর চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে। সেই বৈঠকের কিছু আগেলোকসভা নির্বাচনে বিধাননগর পুরসভা এলাকায় বিজেপির কাছে তৃণমূল এক প্রকার পর্যুদস্ত হয়েছিল। তার পরে সব্যসাচী তা নিয়ে প্রকাশ্যেই পুর কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন। যার জেরে বোর্ডের বৈঠকে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে মন্ত্রগুপ্তির শপথ ভাঙার অভিযোগ আনেন প্রসেনজিৎ। তাঁর সমর্থনে দাঁড়িয়েছিলেন মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী-সহ একাধিক পুরপ্রতিনিধি, যাঁরা বিধাননগরের রাজনীতিতে সব্যসাচীর বিরোধী বলেই পরিচিত। দেবরাজ বলেন, ‘‘কার্যবিবরণী দেখিনি। প্যারা বাদ যাওয়ার কথা আপনার থেকে শুনলাম।’’

বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে সব্যসাচী জানিয়েছিলেন, বোর্ডের পরবর্তী বৈঠকে তিনি সব প্রশ্নের জবাব দেবেন। কিন্তু খবর এমনই যে, তৃণমূলের উপর মহল থেকে চাপ দিয়ে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অংশটিকার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ানো হয়েছে। নতুন যে কার্যবিবরণী পুরপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছে, তাতে পুর চেয়ারম্যান হিসাবে সব্যসাচীর সই রয়েছে। যদিও তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। সব্যসাচী শুধু বলেন, ‘‘এটা পুরসভার ভিতরের বিষয়।’’

আজ বোর্ডের বৈঠকে এই প্যারা বাদ রাখার বিষয়টি নিয়ে রাজারহাটের দিকের একাধিক পুরপ্রতিনিধি সরব হতে পারেন বলে খবর। আবার পুরপ্রতিনিধিদের ওই অংশের বিরোধিতায় সব্যসাচীও চমকে দেওয়ার মতো কোনও পদক্ষেপ করতে পারেন বলেও শোনা গিয়েছে। এক পুরপ্রতিনিধির অভিযোগ, ‘‘কেন প্রকাশ্যে পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান মন্তব্যকরেছিলেন, বুধবারের বৈঠকে সেই জবাব দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে কার্যবিবরণী থেকে ওই প্রসঙ্গ বাদ গিয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, তাঁর পেশ করা বক্তব্য বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করে চেয়ারম্যান সব্যসাচী, মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী-সহ একাধিক জায়গায় চিঠি পাঠিয়েছেন প্রসেনজিৎ। তাতে এ ভাবে প্যারা বাদ দেওয়ার ঘটনা আইনবিরুদ্ধ বলেও তিনিজানিয়েছেন বলে খবর। যদিও প্রসেনজিৎ চিঠির বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি। তিনিও বলেন, ‘‘এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে আমি শুনেছি, আমার বক্তব্য বাদ যেতে পারে। ঠিক বলতে পারব না।"

ঘটনা যা-ই হোক, পুরপ্রতিনিধিদের নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও এই প্যারা বাদ যাওয়া নিয়ে তুমুল অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলেই খবর। তাঁদের একাংশের দাবি, কার্যবিবরণী থেকে প্যারা বাদ দিলেও বৈঠকের রেকর্ডিং রয়েছে। এক পুরপ্রতিনিধির দাবি, ‘‘প্যারা বাদ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু রেকর্ডিং তো আর মুছে দেওয়া যাবে না।’’

উল্লেখ্য, বিধাননগরের এক সময়ের মেয়র তথা বর্তমান পুর চেয়ারম্যান সব্যসাচী অতীতে একাধিক বার বেআইনি নির্মাণ-সহ নানা বিষয় সামনে এনে পুর কর্তৃপক্ষের প্রকাশ্যেই সমালোচনাকরেছিলেন। বিশেষত, তোপ দেগেছিলেন মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। সব্যসাচীর এ হেন পদক্ষেপকে হাতিয়ার করে পুরপ্রতিনিধি তথা দলের একাংশ বর্তমানে তাঁর বিরোধিতায় নেমেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement