Calcutta High Court

উপাচার্য নিয়োগে রাজ্যের অধ্যাদেশকে চ্যালেঞ্জ! জনস্বার্থ মামলা দায়ের কলকাতা হাই কোর্টে

উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটির গঠনে বদল এনেছে রাজ্য। জনস্বার্থ মামলায় দাবি, এর ফলে রাজ্য কোনও সিদ্ধান্ত নিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তা সহজেই পাশ হয়ে যাবে ওই কমিটিতে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ১২:১৭
Challenging the ordinance of Vice chancellor recruitment in West Bengal Universities a PIL case filed in Calcutta high court

কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজ্যের তৈরি অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স)-কে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। বুধবার মামলাটি গৃহীত হয়েছে। আগামী ১২ জুন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে।

কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটির গঠনে বদল এনেছে রাজ্য। তাতে কমিটিতে ৩ জনের পরিবর্তে সদস্যসংখ্যা হয়েছে ৫। আগের সার্চ কমিটির ৩ সদস্যের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যপাল, সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি এবং রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি। এখন পাঁচ সদস্যের মধ্যে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীর এক জন প্রতিনিধি, উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক জন প্রতিনিধি, উচ্চ শিক্ষা সংসদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর এক জন প্রতিনিধি। এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট জনস্বার্থ মামলায় আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তের দাবি, নতুন কমিটিতে রাজ্য সরকারের ৩ প্রতিনিধি থাকার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্য কোনও সিদ্ধান্ত নিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে তা সহজেই পাশ হয়ে যাবে ওই কমিটিতে। এমনকি, সে ক্ষেত্রে রাজ্যপালের মতামত উপেক্ষা করারও উপায় রয়েছে। তাই সার্চ কমিটির বদলের জন্য রাজ্য যে অধ্যাদেশ পাশ করেছে তাকে চ্যালেঞ্জ করা হল।

অন্য দিকে, রাজ্যের যুক্তি, আগের কমিটিতে ইউজিসি-র কোনও সদস্য ছিল না। ফলে আদালতের রায় মেনে সার্চ কমিটি বদল করতেই হত। নতুন কমিটিতে ইউজিসি-র সদস্যকে রাখা হয়েছে। কিন্তু কমিটিতে কারা থাকবেন আইনে সুনির্দিষ্ট করে তা বলা নেই। তাই রাজ্যের প্রতিনিধি বেশি থাকলে আইন অনুযায়ী তাতে কোনও বাধা নেই।

নতুন কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রীর একজন সদস্য থাকার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুস্মিতার বক্তব্য, কমিটিতে নিজেদের ওজন বাড়ানোর জন্যই কি মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? কমিটিতে উচ্চ শিক্ষা সংসদের প্রতিনিধিকে রাখার প্রয়োজনই বা কী, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তবে এ নিয়ে রাজ্যের যুক্তি হল, বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর সিদ্ধান্ত পাশ হয়েছে বিধানসভায়। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর একজন প্রতিনিধি থাকা উচিত বলে মনে করা হয়েছে।

সম্প্রতি ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের চিঠি পাঠান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এর পরেই রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু টুইট করে দাবি করেন, এই পদ্ধতি আইনসম্মত নয়। উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে আচার্য কোনও রকম আলোচনা করেননি। এর পরেই যাঁরা রাজ্যপালের কাছ থেকে অস্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাঁদের ওই পদ প্রত্যাখ্যানের ‘সসম্মান অনুরোধ’ জানান ব্রাত্য। তাই নিয়ে চাপান-উতোরের মধ্যে দায়ের হল এই জনস্বার্থ মামলা।

আরও পড়ুন
Advertisement